ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে মন্ত্রীর ভাতিজাদের সভা
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় বিভিন্ন পোশাক কারখানার ঝুটের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে সভা করেছেন স্থানীয় সাংসদ ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের দুই ভাতিজা। তাঁদের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের নেতারা গত রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার ঠেঙ্গারবান্দ এলাকার বাসভবনে সভা করেন।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও পোশাক কারখানার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালিয়াকৈরে শতাধিক পোশাক কারখানা আছে। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, সেই দলের নেতা-কর্মীরাই এসব কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলায় ওই ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন শিকদার ও তাঁর আত্মীয়স্বজন। এতে দলের একটি বড় অংশ লোভনীয় ঝুট ব্যবসা থেকে বঞ্চিত হন। এ নিয়ে কয়েকটি খুনের ঘটনাসহ বহু হামলা মামলার ঘটনা ঘটে।
ওই ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে গত রোববার সন্ধ্যার পর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. নাছিম কবির ঠেঙ্গারবান্দের বাসভবনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। সভা পরিচালনা করেন তাঁর ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মুরাদ কবির। নাছিম ও মুরাদ আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদ ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজামেঞ্চল হকের মামাতো ভাইয়ের ছেলে।
সভায় নাছিম কবিরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে এলাকার বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ঝুটের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দিতে মন্ত্রী মোজামেঞ্চল হকের কাছে দাবি জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর আলী বলেন, ‘ঝুট ব্যবসায় আমাদের কিছু নেতা বাদ পড়ায় সবাইকে নিয়ে ব্যবসা করার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী সিদ্ধান্ত দেবেন বলে আমরা একমত হয়েছি।’
উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরে দাবি উঠেছে ঝুট ব্যবসা এক পক্ষকে না দিয়ে সবাইকে সুযোগ দেওয়ার। সভায় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীদেরও ঝুট ব্যবসার সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারে মন্ত্রীর কাছে আবেদন করার জন্য বলা হয়েছে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুর রশিদ জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র ঝুট ব্যবসা চালিয়ে ফায়দা লুটছে। অন্য কেউ ওই ব্যবসায় গেলে যাতে মারামারি, কাটাকাটি না হয় এবং দলের লোকেরা যেন সমান সুযোগ পান, সে জন্য সভায় খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। এলাকার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রী নিজে বা প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখবেন বলে আশা করি।’
মো. নাছিম কবির বলেন, ‘ঝুটের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রীর সিদ্ধান্তই আমাদের সিদ্ধান্ত।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আ ক ম মোজাম্মেল হক স্বীকার করেন, নাছিম ও মুরাদ তাঁর মামাতো ভাইয়ের ছেলে। ঝুট ব্যবসা নিয়ে সভার বিষয়টি তিনি জানেন না।