১৮-দলীয় জোটের অবরোধের কারণে কয়েক দফা তারিখ পরিবর্তন করেও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের জন্য বিলি করতে পারেনি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। বোর্ডের অধিভুক্ত ছয় জেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সিহাব উদ্দিন আহমেদ জানান, অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেই গত ৪ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত জেএসসি পরীক্ষা হয়। ওই সময়ের মধ্যে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র এবং সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ের খাতা মূল্যায়নের জন্য শিক্ষকদের কাছে বিলি করা হয়। তবে গণিত, ইসলাম ধর্ম, হিন্দুধর্ম, খ্রিষ্টানধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, শারীরিক শিক্ষা, কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ্য অর্থনীতি, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়সহ নয়টি বিষয়ের খাতা বিলি করা যায়নি।
বোর্ড থেকে জানা গেছে, গণিত বিষয়ের খাতা বিলির তারিখ ছিল ২৪ নভেম্বর। অবরোধের কারণে ২৬ নভেম্বর পরিবর্তিত তারিখ ঘোষণা করা হয়। ওই দিনও অবরোধ থাকায় নতুন করে ৬ ডিসেম্বর তারিখ ঘোষণা করা হয়। ২৪ নভেম্বর ইসলাম, হিন্দু, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধধর্মের খাতা বিলির তারিখ ছিল। ওই তারিখ পরিবর্তন করে ৩০ নভেম্বর স্থানান্তর করা হয়। ওই দিনও অবরোধ থাকায় সেটি ৭ ডিসেম্বর বিলির তারিখ নির্ধারণ করা হয়। শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের খাতা বিতরণের তারিখ ছিল ২৩ নভেম্বর। পরিবর্তিত তারিখ অনুযায়ী গত রোববার খাতা বিলির তারিখ ছিল। অবরোধের কারণে সেটি ৬ ডিসেম্বর স্থানান্তর করা হয়। কৃষি শিক্ষা ও গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ের খাতা ২৮ নভেম্বরের পরিবর্তে ৭ ডিসেম্বর বিলির তারিখ ধার্য করা হয়। বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের খাতা ২৭ নভেম্বর বিলির কথা ছিল। ওই খাতা গত মঙ্গলবার বিলির জন্য শিক্ষকদের বলা হয়েছিল। কিন্তু সেটিও হয়নি।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘৩০ নভেম্বর খাতা বিলি করা হবে, ওই খবর পেয়ে অবরোধের মধ্যে ২৯ নভেম্বর কুমিল্লা শহরে এসে অবস্থান করি। রাতে খবর পাই, ওই দিন থেকে ফের ৭২ ঘণ্টার অবরোধ ডাকা হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।’
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ বলেন, ‘অবরোধের মধ্যে খাতা বিলি করলে ঝুঁকি থাকে। ওই খাতা নিয়ে শিক্ষকদের বাড়ি ফেরায় সমস্যা হতে পারে। তা ছাড়া পরীক্ষক, প্রধান পরীক্ষকদের মধ্যে সভা করে উত্তরপত্র বিতরণ এবং ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাটের বিষয়ে দিকনির্দেশনার বিষয়টি থাকে। সবাইকে একসঙ্গে ডেকে খাতা দেওয়া হয়। অবরোধের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।’