ছাত্রছাত্রীদের অবসরে সৃজনশীলতা চর্চার আহ্বান
করোনাভাইরাসের কারণে ছাত্রছাত্রীরা অনেক অবসর পেয়েছে। পড়াশোনার ফাঁকে যে অবসর পাওয়া যাবে, সে সময় সৃজনশীলতার বেশি চর্চা করতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের এ বিষয়ে বোঝাতে হবে। সৃজনশীলতা মেধার বিকাশ ঘটায়। অবসর সময় কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সে বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা দিতে হবে।
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজে প্রথমবারের মতো আয়োজিত আর্ট ও ক্রাফট এবং ফটোগ্রাফি–বিষয়ক এক আন্তকলেজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম। ‘এসএজিসি ফ্লায়ার হান্ট ১.০, ২০২১’ শীর্ষক প্রতিযোগিতাটি সেপ্টেম্বর মাসব্যাপী অনলাইনে পরিচালিত হয়েছে। গতকাল প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে টিকে থাকতে হলে নতুন প্রজন্মকে চৌকস ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হতে হবে। ছাত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘পুরুষশাসিত সমাজে কীভাবে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ করবে, সেটার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। আমাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আমাদের অনেক মেয়ে অফিসার আছেন। তাঁরা প্রচণ্ড প্রতাপের সঙ্গে কাজ করছেন। অনেক পুরুষ সহকর্মীর কাছে থেকে ভালো কাজ করছেন তাঁরা।’
করোনার কারণে গৃহবন্দী জীবন থেকে শিক্ষার্থীদের মনে সৃষ্ট মানসিক অবসাদ দূর করে নব উদ্যমে লেখাপড়ার পাশাপাশি সৃষ্টিশীল কাজে প্রণোদনা দিতে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কে এম আমিরুল ইসলাম বলেন, সৃজনশীল কাজে শিক্ষার্থীরা যত বেশি যুক্ত হবে, ততই তাদের মৌলিক চিন্তা প্রসারিত হবে এবং জাতিকে তারা সর্বোচ্চটুকু দিয়ে সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল মো. মোজাহিদুল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ ও শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে এসএজিসি ফটোগ্রাফি ক্লাব এবং এসএজিসি আর্ট অ্যান্ড ক্রাফট ক্লাব। আর প্রথম আলো ছিল এ অনুষ্ঠানের সহযোগী।
এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৮৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী। মোট ১৬টি সেগমেন্টে অনলাইনে প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন চিত্রশিল্পী হাশেম খানসহ প্রথিতযশা চিত্রশিল্পীরা।
পুরস্কার পেল যারা
এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৮৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী। মোট ১৬টি সেগমেন্টে অনলাইনে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন চিত্রশিল্পী হাশেম খানসহ প্রথিতযশা চিত্রশিল্পীরা।
ট্রাডিশনাল আর্ট
ট্রাডিশনাল আর্টে বড়দের বিভাগে প্রথম আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের সুমাইয়া জামান, দ্বিতীয় নটর ডেম কলেজের শামাম সাকিব খান এবং তৃতীয় হয়েছে শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের সুরাইয়া ইসলাম।
ছোটদের বিভাগে প্রথম আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের আহনাফ ইসলাম তৌসিফ, দ্বিতীয় শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের সিমিন হাবিব সাফা এবং এই কলেজের মাইশা অর্জুন তৃতীয় হয়েছে।
ডিজিটাল আর্ট
ডিজিটাল আর্টে বড়দের বিভাগে ঢাকা কলেজের মুবাশশির রহমান সিদ্দিক, দ্বিতীয় ব্রিটিশ কাউন্সিলের সুরাইয়া আফরোজ মোমো এবং তৃতীয় হয়েছে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের রমিসা নওয়ার।
ছোটদের বিভাগে প্রথম শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের আয়েশা সিদ্দিকা বিনতে খাইয়ুম, দ্বিতীয় আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের দীপ্ত সিলভেস্টার গোমেজ এবং তৃতীয় হয়েছে শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের কাশফিয়া আনঞ্জুম রহমান।
রি–ডিজাইনিং বুক কাভার
রি–ডিজাইনিং বুক কাভারে বড়দের বিভাগে প্রথম শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের ফারিহা হোসেন, দ্বিতীয় ঢাকা কলেজের মো. ইয়াকুব এবং তৃতীয় হয়েছে ঢাকা সিটি কলেজের সৈয়দা তাসমিয়া ফারজানা ইফা।
ছোটদের বিভাগে প্রথম বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাহনুরা আক্তার বর্নি, দ্বিতীয় শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের আয়েশা নাজমি তাহা এবং তৃতীয় হয়েছে ফয়জুর রহমান আইডিয়াল ইনস্টিটিউটের লুলু মাকতুম।
অ্যানিমে
অ্যানিমেতে বড়দের বিভাগে প্রথম ঢাকা কলেজের মুশফিকুল মুর্শেদ, দ্বিতীয় শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের শেখ আমিনা এবং তৃতীয় হয়েছে ঢাকা কলেজের রহমান সিদ্দিক।
ছোটদের বিভাগে প্রথম শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের সুবাইতা নাওয়ার, একই কলেজের আতকিয়া অন্তরা দ্বিতীয় এবং ইয়াশফা গাজী তৃতীয় হয়েছে।
ডুডল/মান্ডালা
ডুডল/মান্ডালায় বড়দের বিভাগে প্রথম আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ইয়ামিন আলভী অর্ণব, দ্বিতীয় ঢাকা কমার্স কলেজের নিশাত সামিয়া বৃষ্টি এবং তৃতীয় হয়েছে শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের জেরিন জামান রিদা।
আর ছোটদের বিভাগে প্রথম সেন্ট গ্রেগরিজ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের মো. নূর আলম ইসলাম নাফি, দ্বিতীয় নাবিহা তাহসিন প্রিয়ন্তি এবং গভর্নমেন্ট মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মো. আবু উসমান সরকার তৃতীয় হয়েছে।
ক্রাফট
ক্রাফটের বড়দের বিভাগে প্রথম শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের সামিয়া ফারজানা সামি, দ্বিতীয় আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের নিশা লামিয়া এবং ঢাকা সিটি কলেজের নাজিফা জাফরিন অহনা তৃতীয় হয়েছে।
ছোটদের বিভাগে প্রথম আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের আহনাফ ইসলাম তৌসিফ, দ্বিতীয় শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের নুসরাত জাহান নুশিন এবং তৃতীয় হয়েছে একই কলেজের স্বরণী মোরসালিন।
এ ছাড়া বড়দের ইংকমানিয়া বিভাগে প্রথম আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ইয়ামিন আলভী অর্ণব, দ্বিতীয় শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের শেখ আমিনা এবং একই কলেজের জেরিন তাসনিম তৃতীয় হয়েছে।
পেইন্টিং রিভিউর বড়দের বিভাগে প্রথম শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের রমিশা মুর্শেদ, একই কলেজের সাদিয়া রহমান বুশরা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হয়েছে ইফফাত নুসাইবা চৌধুরী।
হ্যালুসিনেশন/কনসেপচুয়ালিজমে বড়দের বিভাগে প্রথম এসওএস হারম্যান মেইনার কলেজের শেরাহ শ্যামায়েল সিদ্দিকী, একই কলেজের ইফফাত নুসাইবা চৌধুরী দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হয়েছে বিএএফ শাহীন ঢাকার সামিহা আমিন।
পটারহেড কুইজে বড়দের বিভাগে প্রথম হয়েছে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জুনায়েদ উদ্দিন। আর্ট অ্যান্ড ক্রাফট অলিম্পিয়ার্ডে বড়দের বিভাগে প্রথম হয়েছে ঢাকা কলেজের সৌরভ সরকার এবং ছোটদের বিভাগে প্রথম হয়েছে শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের সিমিন হাবিবা সাফা।