রংপুরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল প্রতিষ্ঠার ২৬ বছরে ইজারা থেকে কোটি টাকার ওপরে আয় করেছে সাবেক রংপুর পৌরসভা। অথচ বাস টার্মিনালটিতে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ইজারা আয়ের ৪০ শতাংশ টাকা অবকাঠামো ও উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয়ের কথা। এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি বলে মোটর মালিক সমিতি অভিযোগ করেছে।
জানা যায়, রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিবছর ইজারা থেকে কয়েক লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে সাবেক পৌর কর্তৃপক্ষ। ওই টাকা থেকেই সেখানকার উন্নয়ন হওয়ার কথা থাকলেও বছরের পর বছর ধরে উন্নয়নবঞ্চিত থেকেছে টার্মিনালটি। এর ফলে যাত্রী ও শ্রমিকেরা প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।আন্তজেলাসহ দূরপাল্লার সব বাস এখান থেকে চলাচল করে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধান সড়ক থেকে টার্মিনাল কিছুটা নিচু হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি হলে পানি জমে যায়। বাস টার্মিনালের ভবনে যাত্রীদের বসার চেয়ারগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। ভবনের পলেস্তারা অনেক স্থানে খসে পড়েছে। শৌচাগারগুলো নোংরা ও দুর্গন্ধময়।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ১৯৮১ সালে টার্মিনালটি নির্মিত হয়। ’৮৬ সাল থেকে এটি পৌরসভার আওতাধীনে নেওয়া হয়। আর তখন থেকেই পৌরসভা রাজস্ব আদায়ে ইজারা দিয়ে আসছে। এ পর্যন্ত ইজারা থেকে কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এর মধ্যে ২০০৮ সালে ১৩ লাখ, ২০১১ সালে সাড়ে সাত লাখ, গত বছর সাড়ে নয় লাখ টাকা ইজারা আদায় হয়েছে। এদিকে সিটি করপোরেশন হওয়ার পর এ বছর ইজারা আদায় হয়েছে ১৫ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্র জানায়, বাস টার্মিনালের ইজারা থেকে ৪০ শতাংশ টাকা সেখানকার অবকাঠামো ও উন্নয়ন খাতে ব্যয় করতে হবে বলে নীতিমালায় রয়েছে। অথচ দীর্ঘ এতগুলো বছরেও সাবেক পৌর কর্তৃপক্ষ বাস টার্মিনালের কোনো উন্নয়ন করেনি।
জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান জানান, টার্মিনাল প্রতিষ্ঠার পর একবারও সাবেক পৌর কর্তৃপক্ষ বাস টার্মিনালের সংস্কার করেনি। ফলে যাত্রী ও শ্রমিকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন এখান থেকে ২৫০টি বাসে কয়েক হাজার যাত্রী যাতায়াত করে। বর্তমান সিটি মেয়রের কাছে বাস টার্মিনাল উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন তিনি। রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন বলেন, নতুন মেয়র উদ্যোগ নিয়েছেন। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের মেয়র সরফুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘নতুন একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আশা করি, শিগগিরই বাস টার্মিনাল উন্নয়নের কাজ শুরু করা হবে।’