প্রান্তিক জনগোষ্ঠী
কূলহারা উপকূলবাসী মান্তাদের মানতে হবে
নদী আর উপকূলে ভাঙনের অসহায় শিকার মান্তা জনগোষ্ঠীর মানুষের কোনো ‘পাড়’ নেই। জীবনের সব দুঃখ–হাসি-কান্না মিশে আছে একরত্তি নৌকায়।
বছর দশেক আগে উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেদের এক সম্মেলন বসেছিল কক্সবাজারে। সেখানে অতিথি ছিলেন তখনকার অর্থমন্ত্রী। ‘জাওলা’দের সঙ্গে তাঁর মঞ্চে বসার কথা ছিল। তবে স্থানীয় রাজনীতির চাপে নতুন করে এক চেয়ার, দুই চেয়ার বসাতে বসাতে যাঁদের নিয়ে সম্মেলন, তাঁদের আর মঞ্চের কোনো প্রান্তেই রাখা সম্ভব হয়নি। ক্যামেরার নাগালের বাইরে চলে যান জেলেদের নেতারা, নারীরা। ক্যামেরার দৃষ্টি থেকে ‘আউট অব ফোকাস’ হয়ে যান তাঁরা। দৃশ্যটি বড়ই অন্যায্য মনে হলেও আয়োজকদের কিছু করার ছিল না। আসলে এটাই বাংলাদেশের প্রকৃত ছবি। যাঁদের আছে তাঁরাই থাকবেন, যাদের নেই, তাদের থাকবে না কিছুই। এমনকি কয়েক ঘণ্টার জন্য ক্যামেরার সামনেও নয়।
মান্তা জনগোষ্ঠীর এখন সে রকমই অবস্থা। নদী আর উপকূল ভাঙনের অসহায় শিকার এই মানুষগুলোর কোনো ‘পাড়’ নেই। পার হারিয়ে ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিতে চাওয়া জীবন তাঁদের। দেশের প্রধানত উপকূলবর্তী জেলাগুলোর নদী আর মোহনার তীর ধরে হাঁটতে থাকলে চোখে পড়বে সারি সারি নৌকা। এক নৌকা এক পরিবার। জীবনের সব দুঃখ–হাসি-কান্না মিশে আছে একরত্তি নৌকায়। অনেকে তাঁদের ‘বেদে’ বলে ভুল করেন। আসলে তাঁরা বংশপরম্পরায় কূলহারা উপকূলবাসী মান্তা। তাঁদের সম্বল মাত্র একখানা নৌকা আর জাল। নৌকার মাঝখানে ঘুমানোর জায়গা, পেছনের অংশে রান্নাবান্না আর খাওয়াদাওয়া এবং সামনের অংশে কাজকর্ম।
এঁরা কারা
বরিশাল, পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুরের আঞ্চলিক উপকূলীয় ভাষায় মান্তাদের বলে ‘বেআইজ্জা’ বা ‘বেবাইজ্জা’। শব্দ দুটি বেবসতি অর্থে ব্যবহার করা হয়। বেবসতি মানে জমিজমা নেই, বসতি নেই এমন জনগোষ্ঠী। কক্সবাজারের সেই সম্মেলনে আয়োজকদের আমন্ত্রিত ছিলেন একজন নারী। তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল। সম্ভবত তিনি পটুয়াখালীর গলাচিপা অঞ্চলের। অথবা লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট এলাকারও হতে পারেন। ফুলের নামে নাম তাঁর। কদম বানু, বয়স পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই। পরনের শাড়িতে কাগজে লেখা ছিল তাঁর নাম ‘কদানু’। কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্রের নতুনদা এক শ বছর আগে যেমন শ্রীকান্তকে সংক্ষিপ্ত করে কান্ত বানিয়ে দিয়েছিলেন, ঠিক তেমনই অবহেলার ছাপ ছিল কদম বানুর নামের সংক্ষিপ্ত রূপান্তরে। কদম বানু জানিয়েছিলেন, নদী সব কেড়ে নেওয়ার পর যোগ দিয়েছেন নৌকাবাসীর সঙ্গে। তাঁর সম্বল হচ্ছে একটি জাল আর নৌকা। আগে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি ছিল তাঁর। এটাই মান্তাদের এককথার ইতিহাস। কেউ এক পুরুষ, কেউ দুই পুরুষের মান্তা পাড়হারা বেবসতি।
তাঁদের ঠিকানা
বেশির ভাগ মান্তা থাকেন ভোলার তজুমদ্দিন, চরফ্যাশন, দৌলতখানসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়, পটুয়াখালীর গলাচিপা, রাঙ্গাবালী, চরমোন্তাজ, বরিশালের মুলাদী, মেহেন্দিগঞ্জ, বানারীপাড়াসহ সদর উপজেলায়। এ ছাড়া মান্তারা থাকেন লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট, রায়পুরের নাইয়া পাড়া, কমলনগরের মতিরহাট, রামগতি, চর আলেকজান্ডারের বিভিন্ন এলাকায়। উপকূল অঞ্চল ছাড়াও দেশের অন্যান্য এলাকায়ও এই জনগোষ্ঠীর লোকজনের দেখা পাওয়া যায়। সব মান্তা যে সব এলাকায় সব সময় থাকেন, তেমন নয়। খরা মৌসুমে পানি সরে গেলে তাঁরাও পানিকে অনুসরণ করেন। বর্ষায় আবার ফেরত আসেন আগের ডেরায়। তবে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট এলাকায় শতাধিক মান্তা পরিবার ৪০ বছর ধরে প্রায় একই জায়গায় আছে। সন্ধ্যা নদীর বানারীপাড়ার মান্তারাও সেখানে প্রায় স্থায়ী বলা চলে। মাছ ধরার ভরা মৌসুমে একেক অঞ্চলে মান্তাদের নৌকার সংখ্যা বাড়তে থাকে। মান্তাদের নিয়ে বৃহৎ পরিসরে কোনো জরিপ না থাকায় এদের প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কে আঁচ বা অনুমান করা ছাড়া উপায় নেই। ধারণা করা হয়, প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশু মিলিয়ে এদের সংখ্যা আড়াই লাখের বেশি হবে।
জীবিকা
বলা বাহুল্য, এই নদীবাসীদের জীবিকার প্রধান অবলম্বন মাছ শিকার। মা–বাবা, ছেলে–মেয়ে সবাই মিলে জাল, বড়শি নিয়ে মাছ ধরে। নারী–পুরুষ সবাই দক্ষতার সঙ্গে এ কাজ করতে পারেন। শিশুরাও শিখে নেয় তাড়াতাড়ি।
জোয়ারের ওপর নির্ভর করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যান। প্রধানত পোয়া, ইলিশ, পাঙ্গাশ আর ছোট ছোট পোনাজাতীয় মাছ শিকার করেন তাঁরা। উপকূলে বিস্তৃত নানা নদী–খালে শিকার করে সেই মাছ আবার উপকূলের বিভিন্ন ঘাটে বিক্রি করেন। তবে তাঁরা গভীর নদীতে মাছ শিকারে যান না। উপকূলের কাছাকাছি থেকে মাছ শিকার করেন। নদীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে মাছ ধরা শেষে বিকেলে আবার ফিরে আসেন। নদীপাড়ের স্থানীয় বাজারে মাছ বিক্রি করে পাওনাদারদের দেনা পরিশোধ ও খাবারসামগ্রী কেনার পর তাঁদের হাতে তেমন কিছু থাকে না। এ জন্য অর্থ সঞ্চয় বলতে কিছু নেই। মাছ শিকারের পাশাপাশি অনেকেই আজকাল ধান কাটার মৌসুমে কৃষিশ্রমিকের কাজ করেন। তবে এ কাজের জন্য তাঁরা দিনের শেষে নৌকায় ফেরা যায়, এমন দূরত্বের চেয়ে দূরে কথাও যান না। ক্ষুদ্রঋণ আর মহাজনি ঋণের ওপরেও তাঁদের নির্ভরশীলতা রয়েছে।
বিয়েশাদি, তালাক
উত্তরাধিকারসূত্রে মান্তাদের সবাই ইসলাম ধর্মের অনুসারী। তবে তাঁদের বিবাহরীতি আলাদা। পছন্দের কোনো মেয়েকে তার পিতার নৌকা থেকে নিজের নৌকায় তুলে নিলেই বিয়ে হয়ে যায়! আবার বনিবনা না হলে স্বামী তাঁর স্ত্রীকে পিতার নৌকায় পাঠিয়ে দেন, পিতার নৌকায় এলেই হয়ে যায় তালাক! বর্তমানে কিছু কিছু বিয়ে অবশ্য সরকারি খাতায় নিবন্ধিত হচ্ছে। কিন্তু মান্তাদের কারও জন্ম-মৃত্যুর নিবন্ধন হয় না।
বহুবিবাহের প্রচলন থাকলেও বিষয়টি খুব ব্যাপক তা বলা যাবে না। কয়েক বছর আগে একজন সরদারের পাঁচ বিয়ের কথা পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।
প্রচলিত ধারার বাইরে ২০১৮ সালের ১০ মার্চ লক্ষ্মীপুরের কমলগরের মতিরহাট মেঘনাঘাটে মূলধারার নিয়মকানুন মেনে প্রথম এক আনুষ্ঠানিক বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কাগজের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছিল মান্তাদের নৌকা। সেটা ছিল মো. নয়ন (২৩) ও আছমা বেগমের (১৯) বিয়ের অনুষ্ঠান। সেবার গায়েহলুদ থেকে বউভাত সবই হয়েছিল মতিরহাটে। পারের বাসিন্দারা নৌকার মানুষদের সেই আনন্দ উৎসব প্রত্যক্ষ করেছিল।
বিনোদন
মান্তাদের জীবনে আমাদের মাপের কোনো বিনোদন নেই বললেই চলে। লুডু আর ঘুঁটির বাঘবন্দী খেলায় মাতেন কেউ কেউ। মাছ ধরে দিন শেষে অনেকে ব্যাটারির টেপরেকর্ডার নিয়ে বসেন, পুরোনো দিনের সিনেমার গান শোনেন। সেগুলোই তাঁদের একমাত্র বিনোদন। টেপরেকর্ডারের জায়গায় হালের মুঠোফোন ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। নানা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কিস্তিতে কোনো কোনো নৌকায় আজকাল সৌরবিদ্যুতের দেখা পাওয়া যায়। এতে দুই–তিনটা যে বাতি জ্বলে, তাতে অন্ধকার কাটে কিছুটা।
শিশুর জন্ম, লেখাপড়া
নৌকাতেই গর্ভবতী নারীরা সন্তান প্রসব করেন। সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মায়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে হামেশাই। জন্মক্ষণে মায়ের গর্ভ থেকে বয়ে আনা রক্তকণা ধুয়ে দেওয়া হয় নদীর পানি দিয়ে। নৌকার উনুনে নদীর পানি গরম করে জীবনের প্রথম গোসল করানো হয় এসব শিশুকে। জন্ম থেকেই ওদের জীবন কাটে নদীর জলে। শিশুরা হাঁটতে শেখে নৌকায়। একটু হাঁটা শিখে গেলেই নৌকা থেকে পানিতে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। তখন এসব শিশুর হাতে, কোমরে, পায়ে বেঁধে দেওয়া হয় ঝুনঝুনি। তবু বহরের অনেক শিশুই নদীতে হারিয়ে যায় চিরতরে।
নৌকায় বেড়ে ওঠা একটি শিশুর বন্ধুত্ব হয় আরেক নৌকার শিশুর সঙ্গে। পরিবার নিয়ে ভাসমান বহর যখন কোথাও নৌকা বাঁধে, তখন শিশুরা নৌকার বাইরে মাটির স্পর্শ পায়। খোলা মাঠ পেলে ওরা মেতে ওঠে নানা খেলাধুলায়। শিশুরা তাদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে খেলনা ছাড়াই নানা খেলা তৈরি করে নেয়।
শিশুরাও অল্প বয়সে শিখে যায় মাছ ধরার নানা কৌশল। একটু বয়স হলেই তারা মাছ ধরায় সাহায্য করে মা–বাবাকে। শিশুরা ভোগে নানা অপুষ্টিজনিত বিভিন্ন রোগে।
মান্তাদের শিশুদের স্কুলে যাওয়া হয় না। সামান্য অক্ষরজ্ঞানও অর্জন করতে পারে না তারা। পেট না চললে বিদ্যা খুবই অনর্থক তাদের পিতা–মাতার কাছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থা চরমোন্তাজের মান্তা শিশুদের পড়ালেখার জন্য এ অঞ্চলে একটা ভাসমান স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে। তবে সব মান্তা শিশুর শিক্ষার জন্য এটা পর্যাপ্ত নয়। অধিকার নিশ্চিত করতে তা পর্যাপ্ত নয়।
মান্তারা কি দেশের নাগরিক?
এখন জাতীয় পরিচয়পত্রধারী নাগরিক হতে গেলে জন্মনিবন্ধন আব্যশ্যিক। মান্তারা জন্মনিবন্ধনের স্বাভাবিক আওতার বাইরে আছে প্রথম থেকে। তারপরও শেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অর্থাৎ ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো কোনো এলাকায় মান্তারা ভোটাধিকার লাভ করেন। স্বাধীনতার ৩৭ বছর পর সেটাই ছিল তাঁদের প্রথম ভোট। ভোটার তালিকায় নাম ওঠায় তাঁদের এক অন্য পেরেশানির শিকার হতে হচ্ছে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের চাপ আছে, তাঁদের ডাকে যখন তখন সভা-সমাবেশে যেতে হয় তাঁদের। বিনিময়ে দেওয়া হয় রুটি আর চা। রুজি যায় সারা দিনের। যখন ভোটার ছিলেন না, তখন তাঁরা অনেকটাই স্বাধীন ছিলেন।
সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে নানা প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আর শ্রেণি–পেশার মানুষের জন্য নানা বরাদ্দ আর সহায়তা এলেও মান্তাদের তাতে কোনো হিস্যা থাকে না। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তালিকায় মান্তাদের ঠাঁই হয়নি। লক্ষ্মীপুরের চররমণী মোহনের এক নারী জানালেন, আগে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে গুচ্ছগ্রামে একটি ঘর চেয়ে তিনি পাননি। সংসারে একা এই নারী দুস্থ, বয়স্ক ও ১০ টাকার চালের কার্ডের জন্য কয়েকবারই গেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে। প্রতিবার তাঁকে ফিরে আসতে হয়েছে শূন্য হাতে মান্তাদের কোনো বরাদ্দ নেই বলে।
বেশি সমস্যা হয় কেউ মারা গেলে। জন্ম–মৃত্যু নৌকায় সম্ভব হলেও মাটি দেওয়া সম্ভব নয়। পারে বা ডাঙায় কবর দেওয়ার মতো একটুকরা জমি কেউ তাদের দেয় না। পৃথিবীতে বোধ হয় জমি ভিক্ষা পাওয়া সবচেয়ে কঠিন। বাধ্য হয়ে লাশ তাদের ভাসিয়ে দিতে হয় জোয়ারে। নয়তো নদীর তীরে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে রাখা হয়। এ সমস্যা নিয়ে অনেক দেনদরবার হলেও সার্বিকভাবে কোনো সমাধান কেউ দিতে পারেনি। কেবল দু–একটা উপজেলায় কবরের জন্য খাসজমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সমাধান
একজন জেলা প্রশাসককে তাঁর এলাকার মান্তাদের জন্য কেন কিছু করা যাচ্ছে না, সে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন একজন গবেষক। জেলা প্রশাসক বলেছিলেন, এখানের মান্তাদের নৌকা থেকে ভূমিতে ফেরানোর জন্য বহুবারই চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা নৌকা ছেড়ে গুচ্ছগ্রামে যেতে আগ্রহী নন। তাই তাঁদের পুনর্বাসন করা যায়নি।
এটাই বড় সমস্যা, যেখানে জীবিকা নেই, সেখানে প্রাসাদ বানিয়ে দিলেও যে মানুষ থাকে না তার উদাহরণ সারা পৃথিবীতে থাকলেও সেটা আমরা আমলে নিই না। গুচ্ছগ্রাম, আদর্শগ্রাম, আবাসন যে সব সমস্যার সমাধান নয়, সেটা আমরা যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারব ততই মঙ্গল।
একাধিক উপজেলায় নতুন করে আবাসন প্রকল্পে মান্তাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যাঁরা বহরে চলেন, তাঁদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে ঘর দিলে তাঁদের সোশ্যাল ক্যাপিটাল বা সামাজিক সম্পদের কী হবে? সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে জীবিকা হারিয়ে তাঁরা টিকবেন কীভাবে? কীভাবে টেকসই হবে তাঁর নতুন যাত্রা? এসব প্রশ্নের উত্তর না থাকলে এসব সমাধান ব্যবধান বাড়াবে। যাঁদের জন্য আয়োজন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে হবে সবার আগে।
প্রত্যেক মান্তার জন্মনিবন্ধন আর জাতীয় পরিচয়পত্র যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা প্রয়োজন। প্রয়োজন এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে তাঁদের ধারাবাহিক সংযুক্তি। যেহেতু মান্তাদের সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই, সে কারণে ভিত্তি জরিপ করা প্রয়োজন। সামাজিক নিরাপত্তার হকদার হিসেবে সংশ্লিষ্টদের তালিকায় মান্তাদের অন্তর্ভুক্তি দরকার। মাছ ধরাসহ অন্যান্য ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সহজশর্তে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। মান্তা শিশুদের বিকাশের জন্য নতুন কিছু ভাবতে হবে। তাদের জন্য শিক্ষাদীক্ষার আধুনিক ব্যবস্থা প্রসারিত করতে হবে।
লেখক: গবেষক [email protected]