সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে অবহেলার কারণে বায়েজিদ হোসেন নামের এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বায়েজিদ হোসেন (৮) সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে। সঠিক সময়ে চিকিত্সার ব্যবস্থা নিলে তাকে বাঁচানো যেত বলে তার পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছে।
শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার শিশুটির বাবা নিজেদের মরিচখেতে কীটনাশক ছিটান। কীটনাশক রাখার পাত্রটি কোনো রকমে পরিষ্কার করে তা ঘরে রেখে দেন তিনি। আজ মঙ্গলবার সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে শিশু বায়েজিদ ওই পাত্রে মুড়ি মাখিয়ে খায়। এর পর থেকেই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে স্থানীয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিত্সকেরা প্রাথমিক চিকিত্সা দিয়ে জরুরিভাবে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন তাকে। সকাল নয়টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছালেও হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওয়ার্ডবয় রাইসুুল ইসলাম তাঁদের কাছে টাকা দাবি করেন। পরিবারের লোকজন টাকা দেবে বলে স্বীকার করলেও হাসপাতালে শিশুটির সুচিকিত্সার কোনো ব্যবস্থা না করে বাইরে ফেলে রাখা হয়। পরে বায়েজিদের অবস্থা খারাপ হলে তাকে শিশু ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরই বায়েজিদ মারা যায়।
এ ব্যাপারে হাসপাতালে উপস্থিত শিশুটির বাবা লিয়াকত আলী অভিযোগ করে বলেন, বায়েজিদকে সরকারি হাসপাতালে আনার পর এখানকার লোকেরা টাকা দাবি করে। কিন্তু টাকা দিতে দেরি হওয়ার কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সে মারা যায়। তিনি বলেন, হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় রাইসুল তাঁর কাছে ৫০০ টাকা দাবি করেছিল। তিনি এ ঘটনার জন্য উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ কর্মচারী দেওয়ান নাজমুল আরেফিন জানান, ‘রাইসুল সকালে দায়িত্ব পালন করেছে। বর্তমানে সে চলে গেছে। শিশুটির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে টাকা নিয়ে সে-ই কথা বলতে পারে।’
এ বিষয়ে রাইসুলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ফরিদুল ইসলাম জানান, ‘বিষয়টি সম্পর্কে রোগীদের পক্ষ থেকে জানতে পেরেছি। এ বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।