এক মাসেও খুনিদের ধরতে পারল না পুলিশ

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী শিক্ষার্থী তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার এক মাস পেরিয়ে গেলেও তদন্ত এগোয়নি। পুলিশ এ মামলার মূল অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারও করতে পারেনি। সন্দেহভাজন হিসেবে একজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও তাঁকে ঠিকমতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।তবে মামলার অগ্রগতি একেবারে শূন্য—এ কথা মানতে চাননি নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে নজরদারিতে আনা হয়েছে।তানভীরের বাবা রফিউর রাব্বি বলেন, হত্যাকাণ্ডের এক মাস অতিবাহিত হলেও তদন্তে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় তিনিসহ নারায়ণগঞ্জের সব মানুষ হতাশ।গত ৬ মার্চ বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের পুরাতন কোর্টের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর। দুদিন পর শীতলক্ষ্যা নদীর পোতাশ্রয় থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। তানভীরের বাবা নারায়ণগঞ্জের নাগরিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের নেতা রফিউর রাব্বি এ ঘটনায় মামলা করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর নাগরিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে ক্ষুব্ধ কোনো গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে তাঁর ছেলেকে খুন করেছে। এরপর ১৮ মার্চ তিনি জেলা পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নাম জানান। তিনি লিখিত অভিযোগে সাবেক সাংসদ শামীম ওসমান, তাঁর ছেলে অয়ন ওসমান, অয়নের ঘনিষ্ঠ সহযোগী রিফাত বিন ওসমান, সালেহ সীমান্ত, শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ক্যাঙ্গারু পারভেজ, রাজীব দাস, মিজানুর রহমান ওরফে সুজনের নাম জানান। তালিকা দেওয়ার এক দিন পর পুলিশ রিফাত বিন ওসমানকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তাঁর কাছ থেকে কোনো তথ্যই বের করতে পারেনি।নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, নারায়ণগঞ্জের ৯০ শতাংশ মানুষের মুখে মুখে খুনিদের নাম শোনা যায়। অথচ পুলিশ খুনিদের গ্রেপ্তার করছে না। এখন তানভীর হত্যার পর যে গণ-আন্দোলন গড়ে উঠেছে, তা বন্ধ করার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, জেলা সিপিবির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি প্রদীপ ঘোষকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। খুনের প্রতিবাদ করায় আইভীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন শামীম ওসমান। রফিউর রাব্বির ছোট ছেলেকে খুনের হুমকি দিয়ে তাঁর বাসায় চিঠিও পাঠানো হয়েছে।মেয়র আইভী বলেন, তানভীরের আগে একই কায়দায় আশিক, চঞ্চল, ভুলুকে খুন করা হয়েছে। আগের ঘটনাগুলোতে ভুক্তভোগীরা খুনিদের নাম বলতে সাহস পাননি।