কিশোরগঞ্জে শিশুকন্যাসহ মাকে হত্যা মামলায় একজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ডাকাতিসহ দুজনকে হত্যা মামলায় আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আ ম মো. সাঈদ আজ সোমবার দুপুরে এ রায় দেন।
আদালত ও পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ২১ জুলাই দুপুরে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কলাপাড়া গ্রামে প্রথম ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় রবিউল সুমন (২৫) নামের এক ব্যক্তি বাড়ির ভেতর ঢুকে সালমা খাতুন (৩২) নামের এক গৃহবধূ ও তাঁর তিন বছর বয়সী শিশুকন্যা সাবাকে রড দিয়ে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেন। পরে সালমার ঘরে থাকা নগদ ৮০ হাজার টাকা ও ১৩ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যান সুমন।
এ ঘটনায় ওই দিনই সালমার স্বামী আসাদুজ্জামান টিপু বাদী হয়ে সুমনকে আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরদিন ভোরে কুমিল্লার লাকসাম থেকে পুলিশ ঘাতক সুমনকে গ্রেপ্তার করে। মামলার তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক শেখ আবদুল্লাহ আদালতে অভিযাগপত্র দেন। পরে সুমনকে একটি ধর্ষণ মামলার আসামি হিসেবে কিশোরগঞ্জ থানা থেকে চট্টগ্রাম নেওয়ার পথে চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর তিনি কৌশলে পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে যান। আজ বিচারক আসামি রবিউল সুমনের অনুপস্থিতিতে তাঁর ফাঁসির রায় দেন।
অন্য মামলাটি ভৈরব উপজেলায় দুজনকে হত্যাসংক্রান্ত। ২০০৭ সালের ২৩ জানুয়ারি উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে রাত সাড়ে তিনটার দিকে একদল ডাকাত গৃহকর্তা আনোয়ার হোসেন ও তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা সুলতানাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ওই সময় ডাকাতদল নগদ ৭০ হাজার টাকা ও সাত ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। ডাকাতেরা ওই দম্পতির ছেলে হামদাদকে গুরুতর আহত করে।
এ ঘটনায় নিহত আনোয়ার হোসেনের ছেলে আদনান হোসেন বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে ভৈরব থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
ওই মামলায় আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে অতিরিক্ত দু্ই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন মিঠু ওরফে মোশাররফ, আনার হোসেন, জামাল উদ্দিন, রনি মিয়া, কালা মিয়া, বাবুল মিয়া, একরাম হোসেন ও শাহিদ মিয়া। তাঁদের মধ্যে প্রথম চারজন জেলহাজতে এবং শেষ চারজন পলাতক। বাকি দুই আসামি সুমন ও জিল্লু মিয়াকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
উভয় মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) শাহ আজিজুল হক এবং আসামিপক্ষে প্রথম মামলায় আজহারুল ইসলাম স্বপন ও দ্বিতীয় মামলায় ক্ষিতিশ চন্দ্র দেবনাথ মামলা পরিচালনা করেন।