বাল্যবিবাহের শিকার
এই দুঃখগাথা সেই কিশোরীদের
বাল্যবিবাহের কারণে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। অপরিকল্পিত গর্ভধারণ ঘটছে। অনেক মেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাতেরও শিকার হয়। বিচ্ছেদের ঘটনাও কম নয়। করোনাকালে বাল্যবিবাহ বেড়েছে।
সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া কিশোরীটি (১৫) পরিবারের চাপে বিয়েতে রাজি হয়। গত বছরের মে মাসে বিয়ে হয় তার। তবে বিয়েটি দেড় বছরও টেকেনি; গত ৩১ আগস্ট বিচ্ছেদ হয়। ৩১ অক্টোবর মেয়েটির দাদি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক মেয়ের সঙ্গে ওই ছেলের সম্পর্ক ছিল। আমরা জানতাম না।’ তিনি জানান, শুরু থেকেই ঝামেলা হওয়ায় বিয়ের ১৫ দিন পর মেয়েকে ফিরিয়ে আনেন তাঁরা। এ ঘটনায় তাঁরা এতটাই মুষড়ে পড়েছেন যে কারও কাছে অভিযোগ করা বা দেনমোহরের অর্থ চাওয়ার কথাও ভাবেননি। দাদি বললেন, ‘আমরা ভুল করিলাম। মেয়ে রাজি ছিল না। পড়াশোনা করতে চাইছিল। নাতনি বলে, “আমার বিয়ের নাম আর নিসনি। কপাল পুড়ি গেছে।”’
প্রথম আলো বাল্যবিবাহের শিকার মোট ১৫টি মেয়ের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এতে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের এই কিশোরীসহ তাদের সবারই ‘কপাল পোড়া’ চিত্রই সামনে এসেছে।
সাতক্ষীরা ও নীলফামারীর বাল্যবিবাহের শিকার এই মেয়েদের পরিবারসহ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কাজ করা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৫টি বাল্যবিবাহের মধ্যে ১১টিই হয়েছে চলতি বছর। বাকিগুলো গত বছরের। মেয়েগুলোর বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছর। প্রত্যেকেই স্কুল বা মাদ্রাসায় পড়ত। বিয়ের পর দুজন ছাড়া বাকিরা লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে। বিচ্ছেদ হয়েছে ৮ জনের। ছেলে ও মেয়ে—দুই পক্ষ থেকেই সমসংখ্যক বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানো হয়েছে। দুটি মেয়েকে বিচ্ছেদের পর আবারও বিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির নির্যাতনের মুখে একটি মেয়েকে পরিবার ফিরিয়ে এনেছে। আরেকটি মেয়েকে ফেরত পাঠিয়েছেন স্বামী। বিয়ের দেড় বছরের মধ্যে সন্তান হওয়ায় একটি মেয়ে সন্তানসহ অপুষ্টিতে ভুগছে। দুটি মেয়েকে পরিবারের সদস্যরা জোর করে স্বামীর সংসারে পাঠানোর চেষ্টা করছেন।
সাত মাসে ১৩ হাজার ৮৮৬ বাল্যবিবাহ
এ বছরের শুরুতে বিয়ে হওয়ার পর এক মাসের মধ্যেই ১৪ বছর বয়সী মেয়েটিকে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হন মা–বাবা। মেয়েটির মা প্রথম আলোকে বলেন, ২০ হাজার টাকা যৌতুকের কারণে মেয়েকে অনেক মারধর করতেন স্বামী। মামলা করেছিলেন? ‘না। আমরা গরিবগুরোব মানুষ। মামলা করার লোক নাই’, মায়ের জবাব।
করোনা পরিস্থিতিতে দেশে বাল্যবিবাহের অবস্থা জানতে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ‘র্যাপিড অ্যানালাইসিস অব চাইল্ড ম্যারেজ সিচুয়েশন ডিউরিং কোভিড-১৯ ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি জরিপ করে। ওই জরিপ বলছে, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে অক্টোবর—এই সাত মাসে ২১ জেলার ৮৪টি উপজেলায় ১৩ হাজার ৮৮৬টি অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ হয়েছে বরগুনা জেলায়—১ হাজার ৫১২টি। এরপর আছে কুড়িগ্রামে ১ হাজার ২৭২, নীলফামারীতে ১ হাজার ২২২ এবং লক্ষ্মীপুরে ১ হাজার ৪১টি। এসব বিয়ের ৩৫ শতাংশ (মাত্র ৪ হাজার ৮৬৬টি) নিবন্ধন হয়েছে। বাল্যবিবাহের শিকার মেয়েদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বয়স ১৬–১৭ বছর, ৪৮ শতাংশের ১৩–১৫ বছর এবং ২ শতাংশের বয়স ১০–১২ বছর।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে করোনা মহামারির মধ্যে গত দেড় বছর দেশের ৯ জেলায় ৭ হাজার ৬৭৭টি বাল্যবিবাহের তথ্য উঠে আসে। জেলাগুলো হলো খুলনা, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রাম, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বরগুনা ও জামালপুর।
দারিদ্র্য ও নিরাপত্তাহীনতা থেকে করোনাকালে বাল্যবিবাহ বেশি হয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহ্নাজ হুদা। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, বাল্যবিবাহ দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে, এমন পরিবারগুলো মেয়েদের শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে চায় না। গ্রামে এমন কথা চালু আছে, অল্প বয়সে বিয়ে দিলে যৌতুক কম লাগে। যদিও মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পরও যৌতুক চেয়ে নির্যাতন কিংবা বাবার বাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনা অনেক। তিনি আরও বলেন, অল্প বয়সে বিয়ে হলে মা হওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েটির নিজস্ব মত থাকে না। বিয়ের পরপরই সন্তান হয়ে যায়। একাধিক সন্তান ধারণের জন্য মেয়েটি বেশি সময় পায় না। এতে জনসংখ্যা যেমন বাড়ে, মায়ের প্রজননস্বাস্থ্য, শিশুমৃত্যু ও অপুষ্টির ঝুঁকি তৈরি হয়।
‘জনপ্রতিনিধিদের অগোচরে ঘটে না’
২০১৫ সালে দেশের প্রথম উপজেলা হিসেবে কালীগঞ্জকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করা হয়। তবে এখন চিত্র পাল্টে গেছে বলে জানাচ্ছে বেসরকারি সংস্থা প্রেরণা নারী সংগঠন। কুশলিয়া ইউনিয়নে এ সংগঠন নারীদের জন্য কাজের সুযোগ করে দেওয়ার পাশাপাশি নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করে। গত জুলাইয়ে উপজেলার ১১টি স্কুলে একটি জরিপ চালায় সংগঠনটি। এতে দেখা যায়, এর আগের এক বছরে ২৭০টি বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে নলতা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও শ্যামনগর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫৪টি করে মেয়ের বাল্যবিবাহ হয়েছে। নওয়াবেঁকি সফরুন্নেসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোজাহার মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও নকীপুর পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে এ সংখ্যা যথাক্রমে ৩১, ৪৯, ৫১।
প্রেরণা নারী সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক শম্পা গোস্বামী মনে করেন, প্রশাসন জোরালো ভূমিকা নিলেই বাল্যবিবাহ বন্ধ হবে। ২০১৫ সালের পদক্ষেপগুলো এখন ঢিলেঢালা হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘গ্রামে কোনো বাল্যবিবাহের ঘটনা জনপ্রতিনিধিদের অগোচরে ঘটে না। অথচ তাঁরা ভোটের কথা চিন্তা করে বিয়েগুলো ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা নেন না। স্থানীয় পর্যায়ের এ অনীহা উপজেলা প্রশাসন ও থানা পর্যন্ত প্রভাব ফেলে।’
‘সবারই কপাল পুড়েছে’
সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের ১৪ বছরের মেয়েটির সপ্তম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বিয়ে হয়। যৌতুকের দাবি পূরণ করতে না পারায় বিয়ের এক বছরের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটান স্বামী। ১৪ বছর বয়সের আরেকটি মেয়ের বিয়ে তিন মাসও টেকেনি। স্বামী বিচ্ছেদ ঘটান। ১৫ বছরের নবম শ্রেণির মেয়েটি বিয়ের পর থেকেই মারধরের শিকার হয়। মা–বাবা বাধ্য হয়ে মেয়েকে ফিরিয়ে আনেন। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১৩ বছরের মেয়েটির বিচ্ছেদ হয় বিয়ের তিন মাসের মধ্যে। এর এক মাসের মধ্যে মেয়েটিকে আবারও বিয়ে দেন মা। মেয়েটি সৎ বাবার যৌন নিপীড়নের শিকার হতো বলে অভিযোগ আছে। এ কারণে মা বিয়ে দেওয়ার জন্য মরিয়া ছিলেন। ১৬ বছর বয়সী মেয়েটি বিচ্ছেদের পর বাবার বাড়ি ফিরে এসেছে। ১৫ বছরের মেয়েটির মা–বাবা নেই। দাদি বিয়ে দিয়েছেন। স্বামীর যৌন চাহিদায় ভীত হয়ে বাড়ি ফিরে এসেছে। তবে দাদিসহ আত্মীয়স্বজন জোর করে স্বামীর সংসারে পাঠাতে চাইছে। কিছুদিন আগে দাদি পিটিয়ে মেয়েটির হাত ভেঙে দিয়েছেন। ১৫ বছরের আরেক মেয়ে ফুফুর বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বাল্যবিবাহের শিকার হয়। এক মাস পর মেয়েটি বাড়ি ফিরে আসে। এরই মধ্যে তার বিচ্ছেদও হয়েছে।
বাল্যবিবাহমুক্ত অবস্থা থেকে অবনমনের বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য গত সেপ্টেম্বর থেকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসের কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বাল্যবিবাহের তথ্যগুলো জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি আসার কথা। অথচ তাঁদের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
৭৮ শতাংশ বাল্যবিবাহে পরিবারের সায়
২০১৮ সালে মা–বাবার ইচ্ছায় নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বিয়ে হয় মেয়েটির (১৪)। স্বামীর যৌতুক দাবি ও পরকীয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে এ বছরের আগস্টে বিচ্ছেদ ঘটায় সে। প্রথম আলোকে মেয়েটি বলে, ‘বিয়ের সময় সংসারের সব জিনিস নিয়ে গেছি। এরপরও যৌতুক চাইত। চলে আসার সময় কানে দুল ও আংটি পরা ছিলাম বলে পেয়েছি। খাটটা কিছুদিন আগে ফেরত দিয়েছে ভাঙা অবস্থায়।’
এ বছরের আগস্ট মাসে বিয়ে হয় নবম শ্রেণিতে পড়া মেয়েটির (১৬)। বড় জায়ের সোনার হার ও কানের দুল চুরির অভিযোগ দিয়ে তাকে ফেরত পাঠানো হয় বাবার বাড়িতে। ২ নভেম্বর প্রথম আলোকে মুঠোফোনে মেয়েটি জানায়, সে গয়না চুরি করেনি। আর নতুন করে গয়না বানিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য তাদের নেই। সে পড়াশোনা করতে চায় বলে জানায়।
করোনাকালে বাল্যবিবাহ নিয়ে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের করা জরিপ বলছে, ৭৮ শতাংশ বাল্যবিবাহ হয়েছে মা–বাবার ইচ্ছায়।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নীলফামারী জেলা কার্যালয়ের প্রকল্প সমন্বয়ক তাইবাতুন নেহার মাঠপর্যায়ে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে প্রথম আলোকে বলেন, নীলফামারী এলাকায় স্বাভাবিক সময়েই বাল্যবিবাহের ঘটনা বেশি ঘটে। করোনাকালে আরও বেড়েছে। এলাকায়
তুলনামূলক সচেতন ব্যক্তিরাও স্কুল খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতার ভয় থেকে বিয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে কারও সঙ্গে মেয়ে চলে যেতে পারে, এমন আশঙ্কাও করেন কেউ কেউ।
অপরিকল্পিত গর্ভধারণ
২০১৯ সালে বিয়ে হয় নবম শ্রেণিতে পড়া মেয়েটির (১৫)। আট মাসের এক ছেলেসন্তান রয়েছে তার। প্রথম আলোকে সে বলল, ‘বাবার অভাব ছিল, স্বামীরও তেমন অভাব। তবে এরপরও মনে পড়ার ইচ্ছা জাগে।’ কম বয়সে সন্তান হওয়ায় তার শরীর অনেক দুর্বল লাগে জানিয়ে সে বলে, ছেলেও অপুষ্ট। শুরুতে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ নিয়ে সে কারও পরামর্শ পায়নি।
বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ (বিডিএইচএস) ২০১৭-১৮ অনুসারে, ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী নারী গ্রুপের মধ্যে ১৮ বছরের আগে বিয়ে হয় প্রায় ৫৯ শতাংশ মেয়ের। আর ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সের মধ্যে গর্ভধারণ করে ২৮ শতাংশ মেয়ে।
স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যায় বিশেষজ্ঞ–চিকিৎসকদের সংগঠন অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সভাপতি অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ১৯ বছরের আগে সন্তান জন্ম দেওয়া মা ও সন্তান দুজনের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ। শিশুর পেটে (কম বয়সী মা) কখনো শিশু ধারণ করা উচিত নয়। কম বয়সে প্রসবের রাস্তা অনেক সরু থাকে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের জরিপ প্রতিবেদন অনুসারে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে অক্টোবর—এই সাত মাসে ২১টি জেলার ৮৪টি উপজেলায় হওয়া ১৩ হাজার ৮৮৬টি বাল্যবিবাহের মধ্যে ৫ হাজার ৮৯টি মেয়ে অপরিকল্পিত গর্ভধারণের শিকার হয়েছে। ২৯ শতাংশ স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের চাপে, প্রায় ২৮ শতাংশ সচেতনতার অভাব ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা না পাওয়ায় এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো না জানায় করোনাকালে অপরিকল্পিত গর্ভধারণের শিকার হয়েছে ২৮ শতাংশ।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক নিকাহ নিবন্ধনকারী বা কাজি জন্মনিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্কুলের সনদ পরীক্ষা করে মেয়েটি বিয়ের জন্য প্রাপ্তবয়স্ক কি না, তা যাচাই করেন না।
ঢাকা জেলার বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ প্রথম আলোকে বলেন, করোনার টিকা নিবন্ধনের জন্য ব্যবহৃত সুরক্ষা অ্যাপের মতো বিয়ে নিবন্ধনের একটি অ্যাপ থাকা দরকার। এতে ভুয়া সনদ দেখিয়ে বালবিবাহ পড়ানো বন্ধ হবে।
‘উদ্বিগ্ন নয় সরকার’
২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারের জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বাল্যবিবাহ বন্ধ করা, ২০২১ সালে ১৮ বছর বয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে বাল্যবিবাহের হার এক-তৃতীয়াংশ কমানো এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহ পুরোপুরি নির্মূল করার লক্ষ্য রয়েছে।
মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রাম চন্দ্র দাস প্রথম আলোকে বলেন, করোনাকালের আগে বাল্যবিবাহ পরিস্থিতি লক্ষ্যপূরণের কাছাকাছি অবস্থায় ছিল। করোনাকালে তা বিঘ্নিত হয়েছে। সেটিকে আগের অবস্থায় নামিয়ে আনার সরকারের পদ্ধতিগুলোকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন নই। যখনই বাল্যবিবাহের সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে, তখনই তা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’