উহানে ঝুঁকি নিয়ে যাওয়া ২০ বিমানকর্মীকে সংবর্ধনা
গত বছরের শুরুতে করোনা সংক্রমণের সময় চীনের উহানে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের উদ্ধারে ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সেই ঝুঁকি নেওয়া সম্মুখসারির ২০ কর্মীকে সংবর্ধনা দিয়েছে বিমান সংস্থাটি। পাশাপাশি ‘সি-চেক’ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট ১৫ জন কর্মীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আজ রোববার দুপুরে কুর্মিটোলায় বিমানের প্রধান কার্যালয়ের কনফারেন্সরুমে এক অনুষ্ঠানে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। দেশে প্রথমবারের মতো ড্রিমলাইনের সি-চেক কার্যক্রমের সমাপনী ও কোভিড-১৯ মহামারির শুরুতে চীনের উহানে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের উদ্ধারে ফ্লাইট পরিচালনাকারী কর্মীদের সংবর্ধনা দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সব সময়ই দেশ ও দেশের মানুষের প্রয়োজনে নিজেদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে কাজ করে। এ করোনা মহামারির সময়েও এর ব্যত্যয় হয়নি।
অবরুদ্ধ বাংলাদেশিদের উদ্ধারে ফ্লাইট পরিচালনাকারী বিমানের কর্মীদের প্রশংসা করে মাহবুব আলী বলেন, ‘বিমানের পাইলট ও কেবিন ক্রুরা দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে জীবনের মায়াকে তুচ্ছ করে দায়িত্ব পালন করেছেন। অপারেশন সীমিত হলেও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও বিমানবন্দর এক দিনের জন্যও বন্ধ হয়নি। এয়ারলাইনস ও বিমানবন্দরের কর্মীদের আন্তরিকতা, সাহসিকতা ও দেশপ্রেমের কারণেই তখন সারা বিশ্ব থেকে আমরা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাইনি।’
সি-চেক কার্যক্রম হচ্ছে একটি দীর্ঘমেয়াদি, জটিল ও উচ্চ কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন যাচাইয়ের প্রক্রিয়া, যাতে উড়োজাহাজের বিভিন্ন অংশ খুলে বিশদভাবে নিরীক্ষা করা হয়। প্রতি তিন বছর পরপর বোয়িং-৭৮৭ মডেলের ড্রিমলাইনার সি-চেক করতে হয়।
বিমানের দক্ষ প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানদের মাধ্যমে দেশে এই প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার আকাশবীণা উড়োজাহাজের সি-চেক শুরু হয় গত ১৭ আগস্ট। এ কার্যক্রম শেষ হয় ২৮ আগস্ট। অনুষ্ঠানে বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, সি-চেক কার্যক্রম সফলভাবে শেষ হওয়ায় বিমানের আর্থিক সাশ্রয় হয়েছে ছয় লাখ মার্কিন ডলার। এ বছর আরও একটি এবং আগামী বছরে আরও চারটি ড্রিমলাইনারের সি-চেক দেশেই করা হবে। এতে আরও তিন থেকে চার মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থিক সাশ্রয় হবে বিমানের।
এর আগে বিমানের যেকোনো উড়োজাহাজের সি-চেক জার্মানি, ইতালি অথবা সিঙ্গাপুরে এমআরও–এর (মেনটাননস, রিপেয়ার অ্যান্ড ওভারহল অরগানাইজেশন) মাধ্যমে করা হতো। ভবিষ্যতে বিমানের বহরে থাকা উড়োজাহাজগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের চেক দেশেই করার জন্য দক্ষ জনবল ও প্রকৌশল অবকাঠামো তৈরিতে বিমানকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়া হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন প্রমুখ।