ময়মনসিংহের নবগঠিত তারাকান্দা উপজেলা পরিষদে প্রথমবারের মতো নির্বাচন হতে যাচ্ছে ৩ অক্টোবর। তবে এ নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ও সংশয় দুই-ই আছে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, কয়েক দিন ধরেই নির্বাচন নিয়ে উপজেলাবাসীর মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন বাজারের চায়ের দোকানে কে হবেন প্রথম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, সে হিসাব-নিকাশ করছেন ভোটাররা।
উপজেলার রণকান্দা, দোগাছি, মাসকান্দা ও ডৌহাতলী এলাকায় গত রোববার গিয়ে কথা হয় নানা বয়সের ভোটারের সঙ্গে। এ সময় ভোটাররা নির্বাচন নিয়ে তাঁদের উচ্ছ্বাসের কথা যেমন জানান, তেমনি তাঁদের সংশয়ের কথাও বলেন। তাঁরা জানান, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সরকারি দলের সাংসদ বা সরকার-সমর্থিত দলের বাইরে অন্য দলের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব থাকে। এ দূরত্বের কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার উন্নয়ন ব্যাহত হয়। তাঁরা তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকেই ভোট দেবেন। কিন্তু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা যদি আগামী সংসদ নির্বাচনে যে দল সরকার গঠন করবে, তাদের সমর্থক না হন তাহলে তাঁরা (ওই জনপ্রতিনিধিরা) উপজেলার উন্নয়নের কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারবেন, তা নিয়ে তাঁরা সংশয়ে আছেন।
উপজেলার কানুহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলী আশরাফ বলেন, এ দেশে এখনো সরকারি দল আর বিরোধী দলের মধ্যে উন্নয়নকাজ নিয়ে একাত্ম হতে দেখা যায়নি।
সরকারি এক উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক জহিরুল হক বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক মতাদর্শের মিল বা অমিল হলে কী হবে, সেটা অনেক ভোটার ভাবতে পারেন না। কে ভবিষ্যতে সরকার গঠন করবে, তা তো আর এখন বলা যায় না। তাই একধরনের সংশয় নিয়েই আমরা ভোট দেব।’
দুই প্রার্থী সরে দাঁড়ানোয় ১৮ দল সুবিধায়: নির্বাচনের আগ মুহূর্তে চেয়ারম্যান পদে বিএনপি-সমর্থিত দুই প্রার্থী সরে দাঁড়ানোয় এখন সুবিধাজনক অবস্থানে আছে বিএনপি। উপজেলা বিএনপির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা এমনটিই মনে করছেন। তাঁরা জানান, কেন্দ্রের নির্দেশে শেষ সময়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান সদর ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা খান ও বিএনপি-সমর্থক সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মজিবুল হক। এখন বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী হয়েছেন মোতাহার হোসেন তালুকদার।
মোতাহার হোসেন বলেন, ‘পাঁচ সিটিতে বিজয়ের পর তারাকান্দা উপজেলায় আমাদের বিজয় সময়ের ব্যাপার মাত্র। নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকলে যে সরকারই ক্ষমতায় থাক না কেন, কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।’
১৪ দল-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শরীফ আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলে তিনি ধরেননি।