কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা সনদের সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বাধীন ‘বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশনকেই’ আবার সক্রিয় করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। কমিশনের দেওয়া প্রতিবেদন বর্তমান সময়ের আলোকে যুগোপযোগী করে সুপারিশ দিতে আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাস সময় দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলেছে, ৯ অক্টোবর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এই কমিশনের সুপারিশ পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মাওলানা শাহ আহমদ শফী চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের (বেফাক) সভাপতি।
এর দুই সপ্তাহ আগে ২৭ সেপ্টেম্বর ইকরা বাংলাদেশের পরিচালক মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তিনি আহমদ শফীর নেতৃত্বাধীন কমিশনের কো-চেয়ারম্যান। এই কমিটির কর্মপরিধিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৩’-এর খসড়া পর্যালোচনা করে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে শিক্ষাসচিবের কাছে মতামত বা সুপারিশ দিতে হবে।
এই কমিটি গঠনের পর বেফাকের নেতৃত্বে কওমি আলেমদের একটি অংশ কওমি শিক্ষা সনদের স্বীকৃতির বিরোধিতা করে। তবে আহমদ শফী গত সপ্তাহে হাটহাজারী মাদ্রাসায় এক বৈঠকে বলেছেন, সরকার ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের আদলে কওমি শিক্ষার স্বীকৃতি দিতে চাইলে তাঁরা নিতে রাজি আছেন। এমন প্রেক্ষাপটে আহমদ শফীর নেতৃত্বাধীন কমিশনকে আবার সক্রিয় করল সরকার।
শাহ আহমদ শফীর প্রেস সেক্রেটারি মুনির আহমদ বলেন, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সরকার দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যাতে মৌলিক পার্থক্য আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নতুন প্রজ্ঞাপনসহ কওমি শিক্ষা সনদের মানের বিষয়ে আগামীকাল বুধবার হাটহাজারী মাদ্রাসায় বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে আলোচনার পর এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, শিক্ষাদানের বিষয় এবং কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা সনদের সরকারি স্বীকৃতির লক্ষ্যে সুপারিশ দিতে ২০১২ সালে ১৭ সদস্যের ‘বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশন’ গঠন করা হয়। এই কমিশনের নেতৃত্বে ছিলেন আহমদ শফী। বেফাক সূত্র বলেছে, ওই কমিশন গঠনের পর আহমদ শফী কমিটিতে আরও কিছু আলেমকে যুক্ত করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট করার জন্য নাম পাঠান। কিন্তু সরকার তা করেনি। কো-চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন মাসউদের নেতৃত্বে কমিশনের অন্যরা প্রতিবেদন তৈরি করেন। এ অভিযোগে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে ওই কমিশনকে প্রত্যাখ্যান করেন আহমদ শফি। তিনি হেফাজতে ইসলামের আমির।