মদ খেতে গিয়েছিলাম, এটা কি সম্ভব: পরীমনি
মদ খেতে যাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে চিত্রনায়িকা পরীমনি সাংবাদিকদের কাছে পাল্টা প্রশ্ন রেখে বললেন, এটা কি সম্ভব? তিনি বলেন, ‘আমি মদ খেতে বা ছিনতাই করতে গিয়েছিলাম, এটা কি কখনো সম্ভব? আপনারা কি তা-ই মনে করেন? আমি কতটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছিলাম, সেটা কেবল আমিই জানি। সবাই আমাকে সাপোর্ট করেছে। সবার ভালোবাসা দেখে আমি অভিভূত। আমি এখন উঠে দাঁড়াতে পারছি।’
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে যান পরীমনি। ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তাঁর করা মামলায় তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করতে তিনি সেখানে গেছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ ও গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান তাঁর সঙ্গে সেদিনের ঘটনা ও মামলাসংক্রান্ত বিষয়ে তিন ঘণ্টা কথা বলেন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পরীমনি।
চিত্রনায়িকা পরীমনি বলেন, ‘আমাকে ডিবি পুলিশ ডাকেনি, আমি নিজে থেকেই এখানে এসেছি। আমাকে কাজে ফিরতে হবে। সেই কথাটা কিন্তু কেউ ভাবেনি। হারুন স্যার অনেকটা ম্যাজিকের মতো সবকিছু করেছেন। এতটা তাড়াতাড়ি ম্যাজিকের মতো পুলিশ আমাকে সহযোগিতা করবে, সেটা আমি ভাবতে পারিনি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেখলাম অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমার বিশ্বাস, সঠিক বিচার পাব।’
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রথম দিনের বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরীমনি বলেন, ‘প্রথমে অভিযোগটা আপনারা আমার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের মাধ্যমে জেনেছিলেন। এরপর আমি অনেক কথাই বলেছি। এ বিষয়ে ফেসবুক পেজেও ব্যাখ্যা করেছি।’
আইজিপির সঙ্গে যোগাযোগ ও অসহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি আইজিপির কাছে বক্তব্য পৌঁছাতে পারিনি বলেই এত কথা। তিনি আমার একমাত্র ভরসাস্থল ছিলেন। তাঁর কান পর্যন্ত আমার বার্তা পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছেন।’
শিল্পী সমিতি সম্পর্কে নিজের হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম যে শিল্পী সমিতির হয়ে আমি আইজিপি বেনজীর স্যারের সঙ্গে একটু বসতে চাই, কথা বলতে চাই। তুমি (জায়েদ) একটু সহযোগিতা করো। তার জবাবে জায়েদ বলেছিলেন, ‘সরাসরি তুমি আসলে বেনজীর স্যারের সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করে দিতে পারব।’
সেই রাতে আপনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে পরীমনি বলেন, ‘আমাকে মুখ চেপে জোর করে মদ খাওয়ানো হয়েছিল। জানি না ওই অবস্থায় আমাকে মদের সঙ্গে আর কী কী খাওয়ানো হয়েছিল। ওই সময় কিছুই আমি বুঝতে পারছিলাম না। আমি মরে যাচ্ছিলাম। আমি যে মরে যাচ্ছিলাম, সেই অবস্থা জানাতেই থানা-পুলিশের কাছে গিয়েছিলাম। পুরোটাই থানা-পুলিশকে জানিয়েছি এবং তাদের বলেছি যে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। আমাকে মদ খাওয়ানো হয়েছিল, আমি ঠিক নেই, আমি সুস্থ নেই, আমি এখনো সুস্থ নই। আমার সমস্যা হচ্ছে। আমি কখনোই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বলিনি। তারা আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে।’
পরীমনির সঙ্গে কথা বলার পর ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আসামিরা যে যত বড় হোক না কেন, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। সুষ্ঠুভাবে দেখভাল করে মামলার তদন্ত সমাপ্ত করব।’
পরীমনি মামলার সুষ্ঠু বিচার পাবেন, সে বিষয়ে তাঁকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, পরীমনি পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ডিবি কার্যালয়ে এসেছিলেন। সেদিনের ঘটনার বিষয় ও মামলাসংক্রান্ত বিষয় জানতে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন ডিবি কর্মকর্তারা।