বগুড়ায় ছোট ভাই হত্যা মামলায় ১২ বছর বয়সী বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ‘জোর করে স্বীকারোক্তি’ নেওয়ার অভিযোগ ওঠা মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা নয়ন কুমার আপাতত কোনো ফৌজদারি অপরাধের তদন্ত করতে পারবেন না। নয়ন সারিয়াকান্দি থানার সাবেক উপপরিদর্শক। বর্তমানে তিনি নাটোর সিআইডির পরিদর্শক।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
আদালত বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে বিভাগীয় ব্যবস্থা চলছে। বিভাগীয় ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। উনি (নয়ন) অপরাধ করেছেন। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ফৌজদারি কোনো তদন্তের জন্য উনি (নয়ন) অযোগ্য। এই আবেদনের (হাইকোর্টে করা আবেদন) কার্যক্রম চলাকালীন ওনাকে বিরত রাখা হচ্ছে। কোনো তদন্তে উনি থাকতে পারবেন না। আপাতত উনি তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে কোনো ফৌজদারি অপরাধের তদন্ত করতে পারবেন না।’
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন। নয়ন কুমারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সরওয়ার আহমেদ।
জোর করে ১২ বছর বয়সী শিশুর স্বীকারোক্তি নেওয়ার বিষয়ে ১১ জুন ‘বিয়ারিং দ্য আনবিয়ারেবল’ শিরোনামে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এতে বলা হয়, ২০১৫ সালের ২৫ আগস্ট আট বছরের শিশুর মরদেহ উদ্ধারের এক দিন পর সারিয়াকান্দি থানায় মামলা করেন তার বাবা মহিদুল। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে বগুড়ার আদালতে থাকা ওই হত্যা মামলার যথার্থতা ও আইনি দিক পর্যালোচনায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ আইনজীবী ২০ জুন হাইকোর্টে আবেদন করেন, যার ওপর ২৯ জুন শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে আদালত প্রথম তদন্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়ে দুই তদন্ত কর্মকর্তাকে ৩ আগস্ট হাজির হতে নির্দেশ দিয়ে আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ২২ আগস্ট সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা নয়ন কুমার এবং মামলার কেস ডকেটসহ বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা মো. মনসুর আলীকে (উপপরিদর্শক, পিবিআই বগুড়া) আদালতে হাজির হতে বলা হয়।
সেদিন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ৬ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন রাখেন। ধার্য তারিখে নয়ন কুমারকে আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়। আর ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে আপাতত অব্যাহতি দিয়ে বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা মো. মনসুর আলীকে ধার্য তারিখে ভার্চ্যুয়ালি আদালতে যুক্ত থাকতে বলা হয়। এ অনুসারে আজ নয়ন কুমার আদালতে হাজির হন ও মো. মনসুর আলী ভার্চ্যুায়ালি আদালতে যুক্ত হন। শুনানি নিয়ে আদালত ২৭ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন রেখেছেন।