আঙ্গরপোতা ও দহগ্রাম ভারতেরই থাকবে

ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শাখা দাবি করেছে, বাংলাদেশের দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ছিটমহল ভারতের অংশ হিসেবেই থাকবে। বাংলাদেশ-ভারত স্থল সীমান্ত চুক্তি ভবিষ্যতে সংশোধনের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা করা হবে। খবর দ্য হিন্দুর।
স্থল সীমান্ত চুক্তির আওতায় ৩১ জুলাই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে ছিটমহল বিনিময় হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি এমন দাবি করল।
পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি রাহুল সিনহা ভারতের ইংরেজি দৈনিক হিন্দুকে বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ চুক্তি হয়ে গেছে। কিন্তু ভারত সরকার পরে এ দুটি ছিটমহল নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলবে। এখন ছিটমহল বিনিময়ের সময় এটা না হলেও আঙ্গরপোতা ও দহগ্রাম নিয়ে আলাদা করে কথা বলার প্রস্তাব করব।’
রাহুল সিনহার এই বক্তব্য গত ৬ জুন ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে হওয়া সমঝোতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের মধ্যে ছিটমহল হস্তান্তর বিষয়ে যে চিঠি বিনিময় হয়েছে, সেখানে আঙ্গরপোতা ও দহগ্রাম ছিটমহল বিষয়ে ‘আলাদাভাবে’ কথা বলার কোনো প্রসঙ্গ উল্লেখ নেই।
বিজেপির অন্যতম সম্পাদক বিশ্বপ্রিয় রায় চৌধুরী বলেন, আঙ্গরপোতা ও দহগ্রাম ছিটমহল ভারতের জমি দিয়ে ঘেরা (অন্য ছিটমহলগুলোতে যেতে ভারতের জমি দিয়ে যেতে হয়), এটা ভারতেরই থাকা উচিত। তিনি অভিযোগ করেন, তিন বিঘা করিডর ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতকারীরা এসব ছিটমহলে ঢুকে পড়ছে।
তিন বিঘা করিডর হলো ভারতের ভূখণ্ড। ১৯৯২ সালে তা বাংলাদেশকে ৯৯ বছরের জন্য ইজারা দেয় ভারত সরকার। শুরুতে নির্দিষ্ট সময়ে ওই করিডর খোলা রাখা হতো। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ওই করিডর সব সময় খোলা থাকছে। তিন বিঘা করিডরের মাধ্যমে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে আঙ্গরপোতা ও দহগ্রাম ছিটমহল।
বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, বিজেপির দাবি যৌক্তিক নয়। ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশ-ভারত স্থল সীমান্ত চুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিন বিঘা করিডর ব্যবহারের সুবিধার বিনিময়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ বেরুবাড়ী এলাকায় পাঁচটি গ্রাম ভারতের কাছে হস্তান্তর করেছে। ওই পাঁচটি গ্রাম এখন জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্গত। দীপ্তিমান বলেন, ‘আমরা এখন ওই দুটি ছিটমহলের দাবি তুললে ছিটমহল বিনিময়ের পুরো প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু করতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরু করার প্রয়োজন পড়বে।