প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের বর্ধিত ফি বাতিল হওয়ায় ছাত্রলীগ বিজয় মিছিল করছিল। সেখানে হামলা হয়েছে। ছাত্রলীগ প্রতিবাদ করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার সংসদে এক অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যতজনের হাতে অস্ত্র দেখা গেছে, তারা সবাই ছাত্রলীগের নয়। ছাত্রলীগের যারা, তাদের আমরা ইতিমধ্যে বহিষ্কার করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমি আইজিপিকে বলেছি, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হবে, এর সঙ্গে কারা জড়িত।’
সংসদ নেতা আরও বলেন, বাম সংগঠনগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে, তারা যে আন্দোলন করছে, এর মাঝে কারা ঢুকে পড়ছে। তাদের আন্দোলনের ছত্রচ্ছায়ায় ছাত্রশিবির ঢুকে যাবে, ঢুকে বিশ্ববিদ্যালয় দখল করবে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করবে।
বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দিইনি। বিশ্বজিৎ হত্যার পরে ছাত্রলীগের ২২ জনের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। অতীতে কেউ এ ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি।’
রাজশাহীতে জামায়াত-শিবিরের নাশকতার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত ছাত্রলীগের ১৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কেউ কোনো কথা বলেনি। যখন ছাত্রলীগের ছেলেরা সেখানে যেতে পারে না, তাদের রগ কেটে দেওয়া হয়, পত্রিকায় এটা লেখা হয় না। কোনো মানবাধিকার সংস্থাও পাশে গিয়ে দাঁড়ায় না। তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেলেদের কি জীবন বাঁচাবার অধিকার নেই? তবুও সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই। সন্ত্রাসীদের বরদাশত করা হবে না। তবে আত্মরক্ষার অধিকার সবার আছে।’
এর আগে সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী এ-সংক্রান্ত আলোচনার সূত্রপাত করেন। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের যেসব কর্মী সন্ত্রাস চালিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের শুধু বহিষ্কার করলে সমস্যার সমাধান হবে না। এদের মধ্যে যদি ছাত্রশিবিরের কোনো কর্মী থাকে, তাদেরও চিহ্নিত করতে হবে।
জবাবে মতিয়া চৌধুরী বলেন, শাস্তি হবে বিচারের মাধ্যমে। যেমনটা হয়েছে বিশ্বজিৎ হত্যা বিচার। মেজর জেনারেল মঞ্জুর, ডা. মিলনসহ আরও অনেক হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, আইন না মানার ক্ষেত্রে কে কাকে কখন প্রশ্রয় দিয়েছে, সেটা মনে রেখে বিচারের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। পঁচাত্তর থেকে হত্যার যে রাজনীতি শুরু হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।