সাংবাদিকদের ওপর দমন–পীড়ন বেড়েছে

প্রতীকী ছবি

দেশে দেশে সাংবাদিকদের কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনা আগের চেয়ে বেড়েছে। বিশ্বে একই সঙ্গে বেড়েছে সাংবাদিক হত্যার ঘটনাও। আজ বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) এ তথ্য জানিয়েছে।

আরএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত বিশ্বে ৫৩৩ জন সাংবাদিক কারাদণ্ড পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ৪৫৫ জন, নারী ৭৮ জন। গত বছর বিশ্বে ৪৮৮ জন সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এক বছরে এই হার বেড়েছে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ।

কারাদণ্ড পাওয়া সাংবাদিকদের অর্ধেকের বেশি মাত্র পাঁচটি দেশের। তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চীন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১১০ জন সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মিয়ানমারে ৬২, ইরানে ৪৭, ভিয়েতনামে ৩৯ ও বেলারুশে ৩১ সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ পাঁচটি দেশকে সাংবাদিকদের জন্য ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারাগার’ বলেছে সংগঠনটি।

নারী সাংবাদিকদের জন্য চলতি বছরটা ভালো ছিল না। এর আগে কোনো বছরে এত বেশিসংখ্যক নারী সাংবাদিকের কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। ২০২১ সালে বিশ্বে ৬০ নারী সাংবাদিক কারাদণ্ড পেয়েছিলেন।

এদিকে বিশ্বে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৫৭ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে আরএসএফ। তাঁদের মধ্যে ৫০ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা বেড়েছে ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০২১ সালে বিশ্বে ৪৮ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছিলেন। তার আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৫০।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বিশ্বে ৬৫ সাংবাদিক অপহরণের শিকার হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন ৪৯ সাংবাদিক।

আরএসএফের মহাসচিব ক্রিস্টোফি দিলোইরি এক বিবৃতিতে বলেন, স্বৈরশাসক ও কর্তৃত্ববাদী শাসকেরা সাংবাদিকদের দিয়ে তাঁদের কারাগার দ্রুত পূর্ণ করছেন। তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকদের কারাদণ্ড দেওয়ার এ রেকর্ডসংখ্যা জরুরি ভিত্তিতে কর্তৃত্ববাদী শাসকদের বিরুদ্ধে আমাদের কণ্ঠ জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলে। সেই সঙ্গে মুক্ত, স্বাধীন ও বহুত্ববাদী সাংবাদিকতার প্রতি আমাদের সংহতি আরও বাড়ানোর কথা মনে করিয়ে দেয়।’

সংগঠনটি জানিয়েছে, ইরানের পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে দেশটিতে নীতি পুলিশের হেফাজতে ২২ বছরের তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর পর তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। কয়েক মাসের টানা বিক্ষোভে দেশটিতে ৩৪ সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আগামীতে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।