সম্মেলনের শেষ দিনগুলোতে মন্ত্রীরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মতপার্থক্য দূর করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন আলোচকেরা।
বিশ্বের ২০টি বৃহৎ অর্থনীতির দেশের জোট জি২০ সদস্যদের কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলনের আলোচনাকে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের জলবায়ু প্রধান সিমন স্টিয়েল। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল বাড়ানোর তাগিদে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে সম্মেলন চলছে। সিমন স্টিয়েল সতর্ক করে বলেছেন, ‘সামনে আমাদের এখনো অনেক পথ বাকি।’
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতিসংঘের জলবায়ু সংলাপে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। যদিও বাস্তবতা হলো, এ নিয়ে পদক্ষেপ নিতে হলে প্রায় ২০০টি দেশের মধ্যে সর্বসম্মত ঐকমত্য হতে হবে। সম্মেলনের শেষ দিনগুলোতে মন্ত্রীরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মতপার্থক্য দূর করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন আলোচকেরা।
জি২০ নেতাদের উদ্দেশে আবেদন জানিয়ে স্টিয়েল বলেছেন, আগামী সোমবার ব্রাজিলে জি২০ নেতারা যখন আলোচনায় বসবেন, তাঁরা যেন বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখেন।
এক বিবৃতিতে স্টিয়েল বলেছেন, জি২০ নেতারা রিও ডি জেনিরোতে একত্র হচ্ছেন। বিশ্ব তাঁদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে এবং আশা করছে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশগুলোর মূল ভূমিকায় জলবায়ু বিষয়ে পদক্ষেপের বিষয়টি থাকবে।
বিশ্বে জলবায়ুদূষণের অন্যতম কারণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন। এই গ্যাস নির্গমনে সবচেয়ে কম ভূমিকা রাখা উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষ থেকে জলবায়ু প্রভাব মোকাবিলা ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে রূপান্তরে বার্ষিক ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি চাওয়া হচ্ছে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাপানের পক্ষ থেকে যে সহায়তা দেওয়া হয়, তার থেকে ১০ গুণ বেশি সহায়তা প্রয়োজন। কিন্তু অর্থায়নের ধরন ও অর্থ কে দেবে এবং কত অর্থ দেওয়া হবে—এসবের ওপর আলোচনা থমকে গেছে। উন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে চীন ও ধনী উপসাগরীয় দেশগুলোকেও দাতার তালিকায় যুক্ত হতে বলা হচ্ছে।
বর্তমানে যে চুক্তির খসড়া করা হয়েছে, তা ২৫ পাতার। এর বাইরে আরও অনেক কিছু যুক্ত করার সুযোগ রয়েছে।
স্টিয়েল বলেন, বাকুতে আলোচকেরা নতুন জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষ্যে ২৪ ঘণ্টা কাজ করে চলেছেন। আরও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। কপ সম্মেলনের অর্ধেক পথে এসে সবাই এখন এ বিষয়ে সজাগ।
জলবায়ুপ্রধান আরও বলেন, ‘আমাদের প্রক্রিয়ার বাইরে জলবায়ু অর্থায়নের অগ্রগতিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং জি২০-এর ভূমিকা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
ক্ষুধা ও দারিদ্র্য রোধে ব্রাজিলের প্রচেষ্টা
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ব্রাজিলের পক্ষ থেকে জি২০ সম্মেলনে বৈশ্বিক ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মোকাবিলায় ‘গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর হাঙ্গার অ্যান্ড পোভার্টি’ নামের একটি জোট শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ব্রাজিলের এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, শুরুতে ৪১টি দেশ এ জোটে ৫০ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে তুলে আনতে অর্থ ও সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছে। এর আওতায় উন্নত দেশ, বিভিন্ন বেসরকারি ও আর্থিক সংস্থা অর্থ ও তাদের দক্ষতা দিয়ে দরিদ্র দেশগুলোকে সহায়তা দেবে।