বিশ্বে করোনার নতুন ও বহুবার পরিবর্তিত একটি ধরন শনাক্ত হয়েছে। ধরনটি মানুষকে সংক্রমিত করছে।
করোনার নতুন এই ধরনের গতিবিধি অনুসরণ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)।
গত জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের চারটি দেশে করোনার নতুন এই ধরনে সংক্রমিত ছয়জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
৩৬ বার রূপান্তরিত (মিউটেশন) করোনার নতুন ধরনটির নাম ‘বিএ.২.৮৬’।
বর্তমানে বিশ্বে করোনার যে ধরনের আধিপত্য রয়েছে, সেটির নাম ‘এক্সবিবি.১.৫ ’। এই ধরনের সঙ্গে ‘বিএ.২.৮৬’-এর পার্থক্যের মূলে রয়েছে—বহুরূপান্তর। করোনার নতুন ধরনটির ওপর নজর রাখছেন বিজ্ঞানীরা।
অবশ্য এখন পর্যন্ত এমন কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি যে ‘বিএ.২.৮৬’ করোনার আগের সংস্করণগুলোর তুলনায় দ্রুত ছড়ায় বা আরও গুরুতর অসুস্থতার জন্ম দেয়।
নতুন ধরনটির বিষয়ে সিডিসি বলেছে, করোনা থেকে সুরক্ষার জন্য তারা আগে যেসব পরামর্শ দিয়েছিল, তা এখনো বহাল।
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ায় করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। বাড়ছে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা।
সাম্প্রতিক মাসগুলোয় করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার জন্য ‘ইজি.৫’ নামের উপধরনকে (সাবভেরিয়েন্ট) দায়ী করা হচ্ছে। ‘ইজি.৫’ মূলত অমিক্রনের একটি উপধারা। ২০২১ সালের নভেম্বরে প্রথম অমিক্রনের আবির্ভাব ঘটেছিল।
বিগত দিনগুলোয় জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল ও ডেনমার্কে করোনার বহুবার রূপান্তরিত নতুন ধরনটি (‘বিএ.২.৮৬’) শনাক্ত করেছে।
এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইসরায়েলে একজন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর ডেনমার্কে শনাক্ত হয়েছেন তিনজন।
যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন মেথডিস্ট হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক মাইক্রোবায়োলজির মেডিকেল ডিরেক্টর এস ওয়েসলি লং বলেন, করোনার একটি আগের ধারা থেকে বহু রূপান্তরের মাধ্যমে ‘বিএ.২.৮৬’ ধারাটির জন্ম। ফলে করোনার যেসব ধরনকে নিশানা করে টিকা বানানো হয়েছে, তার থেকে এই ধরন (‘বিএ.২.৮৬’) ভিন্ন। এখন দেখার বিষয় হলো, বিস্তারের ক্ষেত্রে এই ধরন অন্যান্য ধরনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হয় কি না কিংবা টিকার প্রতিরোধক্ষমতাকে ফাঁকি দিতে পারে কি না।
অনেক দেশ রোগীর করোনা পরীক্ষা ও ভাইরাসটির জিনোম বিশ্লেষণের প্রচেষ্টা ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ‘বিএ.২.৮৬’-এর গতিপথকে ভালো মনে করছেন না জিনোমিকস বিশেষজ্ঞ এরিক টপোল। তাঁর ভাষ্য, ধরনটির বহুবার রূপান্তর ঘটেছে। এই রূপান্তরই ধরনটির গঠনকাঠামোতে আগের ধরনগুলোর তুলনায় আমূল পরিবর্তন এনেছে। এখন মূল প্রশ্ন হলো, ‘বিএ.২.৮৬’ অত্যন্ত সংক্রামক হয়ে ওঠে কি না।