অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের কাছে একটি হাঁসের খামারে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (বার্ড ফ্লু) শনাক্ত হয়েছে। আগেই বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে এমন পাঁচটি পোলট্রি খামারের কাছে এ হাঁসের খামারটির অবস্থান। অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্য সরকার এমন তথ্য জানিয়েছে।
বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত অন্য খামারগুলোর কাছে স্থাপিত একটি কোয়ারেন্টিন অঞ্চলের মধ্যে হাঁসের খামারটির অবস্থান। সরকার বলছে, এ সংক্রমণের ঘটনাটি আকস্মিক কিছু নয়।
মেলবোর্নের কাছে বার্ড ফ্লু-এর দুটি ধরনের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ায় কর্তৃপক্ষ তা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। চারটি পোলট্রি খামারে বার্ড ফ্লু-এর এইচ৭এন৩ ধরন এবং এর থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি পোলট্রি খামারে এইচ৭এন৯ ধরন পাওয়া গেছে।
বিশ্বজুড়ে এইচ৫এন১ বা বার্ড ফ্লু ভাইরাসের এইচ৫এন১ ধরনটিতে কয়েক শ কোটি বন্য প্রাণী এবং খামারের প্রাণী আক্রান্ত হয়েছে। এতে খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে এবং মানুষের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ভিক্টোরিয়ার কৃষি বিভাগ বলেছে, ‘একটি বাণিজ্যিক হাঁসের খামারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে সেখানে ভাইরাসের অত্যন্ত সংক্রামক ধরন এইচ৭এন৩ আছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জাতীয় নীতিমালার সঙ্গে সংগতি রেখে পশুচিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ওই খামারের সব হাঁসকে মানবীয়ভাবে নিরোধ করা হবে। ওই জায়গাটিকে পরিষ্কার ও সংক্রমণমুক্ত করা হবে।
অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী মুরে ওয়াট চলতি সপ্তাহে বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় ২ কোটি ১০ লাখ থেকে ২ কোটি ২০ লাখ ডিম পাড়া মুরগি আছে। এর মধ্যে ভাইরাসে আক্রান্ত খামারগুলোর প্রায় ১০ লাখ মুরগি মারা যেতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সুপারমার্কেট চেইন কোলস সম্প্রতি তাদের বেশির ভাগ বিপণনকেন্দ্রে ডিম কেনা–বেচার ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। সেখান থেকে কোনো ক্রেতা দুই কার্টনের বেশি ডিম কিনতে পারবেন না। তবে অন্য খুচরা বিক্রেতারা তেমন কোনো বিধি-নিষেধ দিচ্ছে না।
শিল্প কর্তৃপক্ষ এগস অস্ট্রেলিয়া বলেছে, বার্ড ফ্লুর প্রকোপের কারণে সরবরাহব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। তবে সেখানে একেবারেই ডিমের ঘাটতি নেই।
ওয়াট জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, বিষয়টি তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
অস্ট্রেলিয়ার সরকারি হিসাব অনুসারে, ১৯৭৬ সাল থেকে শুরু করে সবশেষ হাঁসের খামারে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় ৯ বার বার্ড ফ্লুর প্রকোপ দেখা গেছে। সব বারই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষ বলছে, হাঁস ও মুরগির ডিম এবং গরুর মাংস খাওয়ায় ঝুঁকি নেই।