ট্রাম্পের আত্মসমর্পণ ঘিরে নিউইয়র্কে কড়া নিরাপত্তা

সম্পর্ক নিয়ে মুখ না খুলতে পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় গত বৃহস্পতিবার ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হন ট্রাম্প। স্টরমির দাবি, ২০০৬ সালে দুজন শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আত্মসমর্পণ ঘিরে সতর্ক অবস্থানে নিউইয়র্ক পুলিশ
ছবি: রয়টার্স

পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় আজ মঙ্গলবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের আদালতে আত্মসমর্পণ করার কথা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। এ জন্য গতকাল সোমবার তিনি নিউইয়র্কে পৌঁছান। ট্রাম্পের উপস্থিতি ঘিরে শুধু ম্যানহাটান নয়, পুরো নিউইয়র্কের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ট্রাম্প টাওয়ারসহ ম্যানহাটানের ফিফথ অ্যাভিনিউজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ।

ট্রাম্পকে নিয়ে গণমাধ্যমে আগ্রহ বরাবরই ছিল। তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কায় বিশ্বের তাবৎ সংবাদমাধ্যম ফলাও করে এ-সংক্রান্ত খবর প্রচার-প্রকাশ করছে। ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে ভিড় করেন অসংখ্য সাংবাদিক। সেখান থেকে ট্রাম্পের আদালতে পৌঁছানোর মুহূর্তের খবর সরাসরি সম্প্রচার করার কথা অনেক সংবাদমাধ্যমের।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও স্টরমি ড্যানিয়েলস।

সাংবাদিক-পুলিশের ভিড়ে ট্রাম্প-সমর্থকদের ব্যানার হাতে বিক্ষোভ করতেও দেখা গেছে। তাঁদেরই একজন ভিতো দিচিয়ারা। ৭১ বছর বয়সী ভিতো একসময় ফক্স নিউজে কাজ করতেন। তাঁর অভিযোগ, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ গঠন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ষড়যন্ত্রের অংশ। আগামী বছরের নির্বাচনে জিতে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে যাওয়া আটকাতেই তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

দেখা গেছে, ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভকারীদেরও। লাল রঙের পোশাকে নকল ১০০ ডলারের নোট লাগিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে এসেছিলেন মারনি হালাসা। তিনি বলেন, একজন পর্নো তারকার মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্পের ঘুষ দেওয়ার প্রতিবাদে এ বেশ নিয়েছেন।

সম্পর্ক নিয়ে মুখ না খুলতে পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় গত বৃহস্পতিবার ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হন ট্রাম্প। স্টরমির দাবি, ২০০৬ সালে দুজন শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। পরে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে এ বিষয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে তাঁকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প।

মঙ্গলবার আদালতে বিচারকের সামনে হাজির হওয়ার আগে ট্রাম্পের আঙুলের ছাপ নেওয়া ও মুখের ছবি তোলার কথা রয়েছে। এরপর আদালতে তাঁকে অভিযোগের বিষয়ে জানানো হবে। শুনানি শেষে তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করার কথা রয়েছে।

এদিকে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার দিনের শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমাদের প্রজাতন্ত্রের জন্য একটি দুঃখজনক দিন (আজ)।’ নিজের ই-মেইল তালিকায় তাঁর পাঠানো এক ই-মেইলের বিষয়বস্তু ছিল, ‘গ্রেপ্তার হওয়ার আগে আমার শেষ ই-মেইল।’ এতে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষায় জনগণকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।

যে বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করবেন, তাঁকে ‘একবারেই দলবাজ’ আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, তাঁর পরিবার ‘ট্রাম্পবিদ্বেষী হিসেবে সুপরিচিত’। এই আদালতকে ‘ক্যাঙারু কোর্ট’ অভিহিত করে ই-মেইল শেষ করেন ট্রাম্প।