হারিয়ে যাওয়া প্রিয় জিনিস খুঁজে পাওয়ার মতো আনন্দ হয়তো আর কিছুতে নেই। আর সেটা যদি ফিরে পাওয়া যায় দীর্ঘ ৫৪ বছর পর, সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে! সেই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা সত্যই কঠিন। এমনই এক আনন্দে ভেসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ডেভিড লরেনজো।
বাবার সঙ্গে পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গের কাছে ইউনিয়নটাউন কাউন্টি ক্লাবে গলফ খেলছিলেন লরেনজো। হঠাৎই আবিষ্কার করেন যে হাতে নেই তাঁর ‘ক্লাস রিং’। ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেভাল একাডেমি থেকে আংটিটি পেয়েছিলেন তিনি। একাডেমিক অর্জনের স্মারক ‘ক্লাস রিং’ যে কারও কাছেই বিশেষ।
যুদ্ধবিমানের পাইলট লরেনজো ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় মার্কিন সামরিক বাহিনীর সাউথইস্ট এশিয়া উইংয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৬৮ সালের জানুয়ারি মাসে প্রতিবেশী দেশ লাওসে শত্রুর গুলিতে তাঁর উড়োজাহাজ ধ্বংস হয়ে যায়। কোনোমতে সেটি থেকে বেরিয়ে এসে প্রাণ রক্ষা করেন লরেনজো। সে সময়ও আংটিটি তাঁর হাতে ছিল। অথচ দুই বছর পর গলফ খেলতে গিয়ে সেটি হারিয়ে যায়।
লরেনজো বলেন, আংটিটি যুদ্ধের ধকল সয়ে যেত পারলেও তাঁর গলফ খেলার দখল সহ্য করতে পারেনি। লরেনজোর বয়স এখন ৮২ বছর। ৫৪ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া আংটিটি ফিরে পাওয়ার কথা তিনি হয়তো কল্পনায়ও ভাবেননি। কিন্তু বাস্তব কখনো কখনো কল্পনাকেও হার মানায়।
সম্প্রতি মাইকেল জেনার্ট নামের এক ব্যক্তি একই ক্লাবে গলফ খেলতে যান। মাটিতে একটি ছোট্ট জিনিস চকচক করতে দেখে তিনি সেটির কাছে এগিয়ে যান। ভেবেছিলেন, হয়তো বিয়ারের ক্যানের ট্যাব (যে অংশ ধরে ক্যান খুলতে হয়) পড়ে আছে। কিন্তু কাছে গিয়ে দেখেন, পড়ে আছে একটি আংটি। বৃষ্টিতে মাটি ধুয়ে সেটি বেরিয়ে এসেছে।
আংটির মালিক খুঁজতে গিয়ে অনলাইন পডকাস্টের একটি পর্বে মনোযোগ আটকায় মাইকেলের। সেখানে লরেনজো নিজের সামরিক জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেন। কথায় ছিল হারিয়ে ফেলা আংটির প্রসঙ্গও। মাইকেল আংটিটি ডাকযোগে না পাঠিয়ে নিজেই ফ্লোরিডায় যান।
লরেনজো এখন পেনসাকোলায় জাতীয় নেভাল অ্যাভিয়েশন মিউজিয়ামে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করেন। সেখানেই হারানো আংটি উপহার হিসেবে নিয়ে হাজির হন মাইকেল। জাদুঘর কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরল এই ঘটনা উদ্যাপন করেছে। বলেছে, এ বছর আগেভাগেই ডেভিড লরেনজোর জীবনে বড়দিন এসে গেছে।