সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার নিষিদ্ধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার পর টুইটার বলেছে, আরও সহিংসতার আশঙ্কা থেকেই ট্রাম্পকে স্থায়ীভাবে টুইটারে নিষিদ্ধ করা হলো। টুইটারের বিরুদ্ধে ট্রাম্প মামলাও ঠুকেছিলেন। ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, টুইটার তাঁর ওপর সেন্সরশিপ করছে।
টুইটারের মালিকানা এখন ইলন মাস্কের। বিরাট অঙ্কের অর্থে টুইটার কিনে নিয়েছেন তিনি। চাকরিচ্যুত করেছেন টুইটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পরেশ আগারওয়ালসহ তিন কর্মকর্তাকে। টুইটারের বদলের পর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা থাকবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।
মাস্কের যুগে ট্রাম্প টুইটারে ফিরবেন নাকি ফিরবেন না, তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।
ইলন মাস্ক এরই মধ্যে টুইটে বলেছেন, ট্রাম্পকে ফেরত আনা হবে কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে তিনি কাউন্সিল চালু করবেন। আবার টুইটার আমন্ত্রণ জানালে ফিরে আসাটা ট্রাম্পের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ না–ও হতে পারে।
যদিও ইলন মাস্কের মতো ডোনাল্ড ট্রাম্পও টুইটারকে ভালোবাসেন। মূলধারার গণমাধ্যমগুলোকে পাশ কাটিয়ে ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের জন্য টুইটার ট্রাম্পের কাছে ভালো মাধ্যম। এ ছাড়া ট্রাম্পের টুইট গণমাধ্যমের মনোযোগের কেন্দ্রে থাকে। তবে এখন সময় বদলেছে। টুইটারে ট্রাম্পের ফিরে না আসার পেছনে এখন অনেক কারণ রয়েছে।
প্রথমত, এখন ট্রাম্প নিজে ট্রুথ সোশ্যাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পরিচালনা করেন। ট্রুথ সোশ্যাল অনেকটাই টুইটারের মতো। ট্রাম্প মানুষকে এখানে পোস্ট দিতে অনুমোদন দেন। ট্রুথ সোশ্যাল ট্রাম্প পরিচালনা করেন বলে এই প্রতিষ্ঠানের সাফল্যে তাঁর নিজের সরাসরি অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। এখন পর্যন্ত ট্রুথ সোশ্যালের সবচেয়ে বড় সম্পদ ডোনাল্ড ট্রাম্প।
টুইটারে টুইট করার জন্য ট্রাম্প কোনো অর্থ পান না। তবে ট্রুথ সোশ্যাল যদি প্রধান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হয়, তাহলে ট্রাম্প এর সুফল পাবেন। তবে এ মুহূর্তে ট্রুথ সোশ্যাল এ রকম মাধ্যম হয়ে ওঠেনি।
অ্যাপ পর্যালোচনা প্রতিষ্ঠান সেন্সর টাওয়ার বলছে, গত মাসে মাত্র ৯২ হাজার ট্রুথ সোশ্যাল ইনস্টল করেছে। সামাজিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি খুবই স্বল্প লাভের।একই সময়ে টুইটার ইনস্টল করা হয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ।
ট্রুথ সোশ্যালকে যদি সফল হতে হয়, তাহলে ট্রাম্পকে এখানে থাকতে হবে। এক বিবৃতিতে এর ব্যাখ্যা দিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি টুইটারে ফিরে আসা নিয়ে ভাবছেন না।
তবে শুধু অর্থনৈতিক কারণেই ট্রাম্প টুইটারে আসবেন না, তা নয়। বেশি ভোট পেতেও ট্রাম্পের টুইটার থেকে সরে যাওয়া ভালো বলে ধারণা প্রচলিত রয়েছে। এমন ধারণা প্রচলিত আছে, টুইটার ট্রাম্পের ভাবমূর্তি ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছে।
রিপাবলিক নেতারা মনে করেন, টুইটারে ট্রাম্পকেন্দ্রিক মনোযোগ বেশি থাকে। ট্রাম্পও মনোযোগ আকর্ষণের কারণে বিভিন্ন টুইট করেন। ফলে অন্য রিপাবলিকান নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি ঘুরে যায়।
এমন ধারণাও প্রচলিত রয়েছে, ট্রাম্প ফিরে আসতে চাইলেও টুইটার তাঁকে সে সুযোগ না–ও দিতে পারে। গতকাল এক টুইটে ইলন মাস্ক বলেন, ট্রাম্পকে নিষিদ্ধ করা হবে না টুইটারে ফিরিয়ে আনা হবে, সে ব্যাপারে কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেবে। এর অর্থ হলো, টুইটারে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকতে পারে।
ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক দুজনেই টুইটারের ভালো ব্যবহারকারী। তবে তাঁরা কী করবেন, তা অনুমান করাও কঠিন।