ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রেও চলছে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। দেশটির বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা আরও বেড়ে যাওয়ার আভাস দেওয়া হয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য স্বাস্থ্য সতর্কতা জারির প্রস্তুতি চলছে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে সতর্ক হতে বলা হয়েছে। খবর এএফপির
স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া দপ্তরের (এনডব্লিউসি) এক টুইটার পোস্টে বলা হয়, ‘দেশের একটা বড় অংশ বিপজ্জনক তাপমাত্রার মধ্যে আছে। চলতি সপ্তাহে এ পর্যন্ত ৬০টি উচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এ ধরনের আরও তাপমাত্রা রেকর্ড হতে পারে।’
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক শহরের বাসিন্দাদের বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে বলা হয়েছে। এর জন্য শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের তাপমাত্রা বাড়িয়ে ব্যবহার করা এবং বড় বড় যন্ত্রপাতির প্লাগ খুলে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে টেক্সাসের বাসিন্দাদেরও বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে বলা হয়েছে। বেলা দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত বড় ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। রাজ্যের বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে, বাতাসের কম গতি গ্রিডের সক্ষমতাকে হুমকির মুখে ফেলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ বাড়িতে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত যন্ত্র ব্যবস্থা থাকায় আপাতত তাপপ্রবাহজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে পারছেন স্থানীয় লোকজন। তবে ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের গ্রিডের ওপর চাপ বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটা বড় অংশজুড়ে ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় তা ১১০ ডিগ্রি ফারেনহাইটকে ছাড়িয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলেও একই রকমের তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। তবে তাপমাত্রার পাশাপাশি সেখানে আর্দ্রতা বেশি থাকায় মানুষ আরও বেশি অস্বস্তিতে পড়েছে।
গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া দপ্তরের (এনডব্লিউএস) এক টুইটার পোস্টে বলা হয়, ১০ কোটি মানুষকে তাপমাত্রাজনিত সতর্কতার মধ্যে রাখা হয়েছে। আর গতকাল আরেকটি টুইটার পোস্টে বলা হয়, জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশকে সপ্তাহজুড়ে এমন সতর্কতার মধ্যে থাকতে হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে ইতিমধ্যে তাপমাত্রা বাড়ছে। উচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে উচ্চ আর্দ্রতা মিলে সেখানে অনেক বেশি তাপমাত্রার অনুভূতি হচ্ছে।
ওয়াশিংটন ও ফিলাডেলফিয়াতে তাপমাত্রাজনিত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে আভাস দিয়েছেন, এ ধরনের তাপপ্রবাহ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে প্রায়ই দেখা দিতে পারে। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে এসব তাপপ্রবাহের তীব্রতা বাড়বে।