সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা হামাসের হামলার লক্ষ্য বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, ‘হামাসের ইসরায়েলের দিকে অগ্রসর হওয়ার একটি কারণ...তারা জানত যে আমি সৌদিদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছি।’
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হাসাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। এর পর থেকে গাজায় নারকীয় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট গতকাল শুক্রবার আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে তহবিল সংগ্রহের প্রচার চালান। এ সময় হামাসের হামলার একটি কারণ সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টিকে বাধাগ্রস্ত করা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাইডেন সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একই কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন। তবে সেখানে তিনি এ-ও বলেন, সৌদি আরব-ইসরায়েল সম্পর্ক ‘এখনো অটুট, এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র’।
এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও একই কথা বলেছিলেন। ৮ অক্টোবর সিএনএনকে তিনি বলেন, এটা মোটেও অবাক করার মতো বিষয় হবে না যে হামাসের হামলার একটা উদ্দেশ্য সৌদি আরব-ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে বাধা সৃষ্টি করা।
গত জুন মাসে ব্লিঙ্কেন সৌদি আরব সফর করেন। তাঁর ওই সফরের অগ্রাধিকার ছিল সৌদি আরবসহ অন্য আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা।
এর আগে ২০২০ সালে আরব বিশ্বের দুই দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও বাহরাইনের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এতে দূতিয়ালি করেছিল।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৪ হাজার ১৩৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত ১৩ হাজারের বেশি মানুষ। নিহত মানুষের মধ্যে শিশু ১ হাজার ৫২৪, আর নারী ১ হাজারের বেশি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ১১ সাংবাদিকও। এ ছাড়া পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের হামলায় গতকাল ৫ শিশুসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন।
আর ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের হামলা ও তাদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় তাদের দেশে নিহত মানুষের সংখ্যা ১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৬২৯ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৬৩ সেনা ও পুলিশ সদস্য।
জাতিসংঘের হিসাব বলছে, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি বাড়ি। সংখ্যাটি গাজার মোট বাড়ির তিন ভাগের এক ভাগ। এর জেরে উপত্যকাটিতে ১০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুহারা হয়েছেন।