জলবায়ু পরিবর্তনের কথা জেনেও চেপে গিয়েছিল এক্সনমবিল

জীবাশ্ম জ্বালানি বিক্রি করে শত শত কোটি ডলার আয় করেছে এক্সনমবিলের মতো কোম্পানিগুলো
ছবি: রয়টার্স

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানি এক্সনমবিল। মার্কিন কোম্পানিটির বিজ্ঞানীরা ১৯৭০–এর দশকেই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি নিয়ে সঠিক পূর্বাভাস দিয়েছিল।

এক্সনমবিলের নিজস্ব গবেষকেরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো কীভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেবে। কিন্তু গবেষকদের পাওয়া এই যোগসূত্রের বিষয়টি জনসমক্ষে অস্বীকার করেছিল কোম্পানিটি।

শিক্ষাবিদেরা কোম্পানিটির অভ্যন্তরীণ নথিপত্রের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ অভিযোগ করেছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে এক্সনমবিল।

কোম্পানিটি বিবিসিকে বলেছে, ‘বিষয়টি সাম্প্রতিক বছরগুলোয় কয়েকবার সামনে এসেছে। প্রতিবার আমাদের জবাব ছিল একই—যাঁরা বলেন “এক্সন জানত”, তাঁদের এমন সিদ্ধান্ত ভুল।’

জীবাশ্ম জ্বালানি বিক্রি করে শত শত কোটি ডলার আয় করেছে এক্সনমবিলের মতো কোম্পানিগুলো। বিজ্ঞানীরা, বিভিন্ন দেশের সরকার এবং জাতিসংঘ বলছে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নির্গমনের ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে।

গবেষণায় দেখা যায়, এক্সনমবিলের ভবিষ্যদ্বাণী বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নাসার বিজ্ঞানীদের ভবিষ্যদ্বাণীর চেয়ে অনেকটাই বেশি সঠিক ছিল।

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির হিস্টরি অব সায়েন্সের অধ্যাপক নাওমি ওরেসকেস বিবিসিকে বলেন, এটি সত্যিই এক্সনমবিলের নেতৃত্বের চরম ভণ্ডামিকেই প্রকাশ করে। তারা জানত, তাদের নিজস্ব বিজ্ঞানীরা এই অত্যন্ত উঁচুমানের আদর্শ গবেষণাকাজটি করছেন। এসব তথ্য-উপাত্ত পাওয়ার বিশেষ সুবিধা কোম্পানিটির নেতৃত্বের ছিল, যখন তারা আমাদের বাকিদের বলেছিল, জলবায়ুসম্পর্কিত গবেষণাগুলো আজগুবি ভাবনা।

গবেষণার এই ফলাফলকে ‘চূড়ান্ত তথ্যপ্রমাণ’ বলছেন সহলেখক জেফ্রি সুপরেন। তিনি মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান ও নীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্লেষণ মূলত প্রথমবারের মতো আমাদের একটি সংখ্যা উল্লেখ করার সুযোগ করে দিয়েছে যা এক্সনমবিল জানত। আর সেটা হলো, তাদের জীবাশ্ম জ্বালানি পণ্য পোড়ানোর ফলে এই গ্রহের তাপমাত্রা প্রতিটি দশকে শূন্য দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে যাচ্ছে।’

জেফ্রি সুপরেন বলেন, গবেষকেরা এর আগে কখনো এক্সনমবিলের নথিপত্রে এ–সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণাদিকে সংখ্যা আকারে প্রকাশ করেননি।