রাষ্ট্রদ্রোহী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের কট্টর ডানপন্থী সংগঠন ওথ কিপার্সের প্রতিষ্ঠাতা স্টুয়ার্ট রোডসকে গতকাল বৃহস্পতিবার ১৮ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে এ সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘটনায় এটি এখন পর্যন্ত দেওয়া সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি সাজা।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারপতি অমিত মেহতা গতকাল স্টুয়ার্ট রোডসের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করেন। আদালতে রোডস নিজেকে রাজনৈতিক বন্দী বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, যেসব মানুষ দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছিলেন, তাঁদের বিরোধিতা করার চেষ্টা করছিলেন।
বিচারক মেহতা রোডসকে বলেন, ‘রোডস, এ কথা পরিষ্কার যে কয়েক দশক ধরে আপনি এ দেশের গণতন্ত্রকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।’
মেহতা আরও বলেন, ‘রোডস, আমার বিশ্বাস যাঁদের বিরুদ্ধে আমি সাজা ঘোষণা করেছি, তাঁদের কারও সম্পর্কে আমি কখনো এ ধরনের কথা বলিনি। জনাব, আপনি এ দেশ, প্রজাতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য হুমকি ও বিপদ তৈরি করছেন।’
কৌঁসুলিরা রোডসের বিরুদ্ধে ২৫ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিলেন। পরে বিচারক তাঁকে ১৮ বছরের কারাদণ্ড দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ছত্রীসেনা রোডস পরবর্তী সময়ে আইনজীবী হয়ে ওঠেন। তিনি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। ওয়াশিংটনের একটি ফেডারেল কোর্টের জুরি তাঁকে গত নভেম্বরে দোষী সাব্যস্ত করেন।
ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার ঘটনায় এ পর্যন্ত এক হাজারের বেশি মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। রোডসের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণার আগপর্যন্ত সর্বোচ্চ সাজার মেয়াদ ছিল ১৪ বছর। পেনসিলভানিয়ার এক ব্যক্তিকে এ কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
রোডস তাঁর কর্মকাণ্ডের জন্য কোনো ধরনের অনুশোচনা প্রকাশ করেননি। উল্টো যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য কট্টর বামপন্থীদের দায়ী করেছেন তিনি।
২০০৯ সালে ওথ কিপার্স প্রতিষ্ঠা করেন রোডস। তাঁর একটি চোখ নষ্ট। ভুলবশত নিজের বন্দুক দিয়ে নিজের মুখে গুলি করার কারণে তাঁর চোখটি নষ্ট হয়ে যায়। ওথ কিপার্সের সদস্যদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারাও আছেন।
২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন জয়ী হন। কিন্তু এ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে পরাজয় মানতে অস্বীকৃতি জানান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
বাইডেনের জয়ের সত্যায়নে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন বসে। সত্যায়নের প্রক্রিয়া ঠেকাতে ট্রাম্পের উসকানিতে তাঁর উগ্র সমর্থকেরা কংগ্রেস ভবনে (ক্যাপিটল) সহিংস হামলা চালান। এতে পুলিশসহ কয়েকজন নিহত হন।