সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারের নতুন মালিক ইলন মাস্ক আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার টুইটার কর্মীদের সঙ্গে এক বৈঠকে এই ধনকুবের এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন। খবর রয়টার্সের।
বিশ্বের শীর্ষ ধনী মাস্ক গত ২৭ অক্টোবর টুইটারের মালিকানা গ্রহণ করেন। তিনি ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে টুইটার কেনেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী মাস্ক টুইটার অধিগ্রহণের পর থেকে কোম্পানিটিতে অস্থিরতা চলছে।
মাস্কের মালিকানায় টুইটারের ভবিষ্যৎ নিয়ে আগে থেকেই বিশেষজ্ঞরা নানা আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছিলেন। এখন মাস্ক নিজেই টুইটার নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন। প্রতিষ্ঠানটি বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে পারে বলে তিনি সতর্ক করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনফরমেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল বিকেলে টুইটারের সব কর্মীর সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন মাস্ক। তিনি টুইটার কর্মীদের বলেন, কোম্পানিটি আগামী বছর কোটি কোটি ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
আরেকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, মাস্ক টুইটার কর্মীদের বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটির দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তিনি উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
মাস্কের আশঙ্কার মধ্যে টুইটারের শীর্ষস্থানীয় তিন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল টুইটারের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা লিয়া কিসনার টুইট করে বলেন, তিনি পদত্যাগ করছেন।
একই দিন পদত্যাগ করেছেন টুইটারের প্রধান প্রাইভেসি কর্মকর্তা ডেমিয়েন কিয়েরান ও প্রধান কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তা মারিয়ান ফোগার্টি।
তিন শীর্ষ কর্মকর্তার পদত্যাগের পর যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল ট্রেড কমিশন বলেছে, তারা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে টুইটারের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। এসব কর্মকর্তার পদত্যাগ টুইটারকে নিয়ন্ত্রক আদেশ লঙ্ঘনের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
দেউলিয়াত্বের আশঙ্কা, শীর্ষ কর্মীদের পদত্যাগ, ফেডারেল ট্রেড কমিশনের সতর্কতা—এসব বিষয়ে টুইটারের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানার চেষ্টা করে রয়টার্স। কিন্তু টুইটার সাড়া দেয়নি।
টুইটারের মালিকানা গ্রহণ করেই সিইও পরাগ আগারওয়ালসহ কোম্পানির কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেন মাস্ক। ইতিমধ্যে তিনি টুইটারের হাজারো কর্মীকে ছাঁটাই করেছেন। কর্মীদের কর্মঘণ্টা বাড়িয়ে ছুটি বন্ধ করেছেন। যাঁরা বাড়িতে বসে অফিস করছিলেন, তাঁদের অফিসে এসে কাজের নির্দেশ দিয়েছেন। এসব পদক্ষেপসহ তিনি টুইটারের নিয়মনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন।