গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলার নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনবিশেষজ্ঞরা। তাঁরা অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছেন।
হামলা বন্ধ ও যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে ইসরায়েলকে চাপ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির ১৭৮ আইনবিশেষজ্ঞ। তাঁদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রভাবশালী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক রয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন আজ বুধবার ইসরায়েল সফরে যাওয়ার কথা। তাঁর এ সফরের আগমুহূর্তে আইনবিশেষজ্ঞরা তাঁকে ওই চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে আইনবিশেষজ্ঞরা বাইডেনকে ‘সরাসরি হস্তক্ষেপ’ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এরই মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার রাতে মধ্য গাজার আল-আহলি আরব নামের একটি হাসপাতালে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। এ হামলায় প্রাণ গেছে অন্তত ৫০০ জনের।
মার্কিন আইনবিশেষজ্ঞদের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গাজায় ইসরায়েলি সরকারের ক্রমবর্ধমান প্রতিক্রিয়ার নিন্দা জানাই আমরা। আমাদের মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আপাত সমর্থনে গাজায় নিরস্ত্র পরিবার ও শিশুদের হত্যা ও বাস্তুচ্যুত করা হচ্ছে।’
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা নৃশংসতায় গাজা উপত্যকায় তিন হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৯৪০ শিশু ও ১ হাজার ৩২ নারী রয়েছেন।
আইনবিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান মৃতের সংখ্যা শুধু সরাসরি সামরিক হামলার ফলাফল নয়, বরং ইসরায়েলি সরকারের পক্ষ থেকে গাজাবাসীকে দিনের পর দিন ধরে মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত রাখারও ফল।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন এক হামলা চালায়। এর পর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এতে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এ উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে মিত্র ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানানোর অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা দেশটিতে সফর করেছেন। আজ বাইডেন নিজে ইসরায়েলে যাচ্ছেন। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বাইডেন।
ইসরায়েল সফর শেষে জর্ডানের রাজধানী আম্মানে যাওয়ার কথা বাইডেনের। সেখানে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্টের।
তবে জর্ডান জানিয়ে দিয়েছে, বাইডেনের সঙ্গে তিন আরব নেতার যে নির্ধারিত বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, তা আর হচ্ছে না। গাজার হাসপাতালে হামলার প্রতিবাদে জর্ডান বাইডেনের সঙ্গে নির্ধারিত এ বৈঠক বাতিল করেছে। এর আগেই বাইডেনের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক বাতিলের ঘোষণা দিয়ে জর্ডান থেকে দেশে ফেরেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।