যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী থেকে ‘ট্রান্সজেন্ডার মতাদর্শ’ বের করে দিতে নতুন একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পের সই করা এই নির্বাহী আদেশ এলজিবিটিকিউ অধিকারের ক্ষেত্রে একটি বড় ধাক্কা হয়ে আসতে পারে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার রাতে ফ্লোরিডা থেকে এয়ারফোর্স ওয়ানে করে ওয়াশিংটন ফেরার পথে চারটি নতুন নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। এই আদেশগুলোর একটি মার্কিন সামরিক বাহিনীতে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ সেনাসংশ্লিষ্ট বিষয়ের। মার্কিন সামরিক বাহিনীতে ট্রান্সজেন্ডারদের চাকরি নিষিদ্ধের লক্ষ্যে আদেশটিতে সই করেছেন ট্রাম্প।
বিবিসির খবরে বলা হয়, হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশটি ট্রান্সজেন্ডার সেনাদের বিষয়ে একটি নীতি প্রণয়নে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে। নির্বাহী আদেশটি এখনই মার্কিন সামরিক বাহিনীতে ট্রান্সজেন্ডারদের নিষিদ্ধ করেনি।
একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ফ্লোরিডায় গিয়েছিলেন ট্রাম্প। গতকাল এই অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী যোদ্ধা থাকার বিষয়টি নিশ্চিতে মার্কিন সামরিক বাহিনী থেকে ট্রান্সজেন্ডার মতাদর্শ বের করে দেবেন তিনি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ট্রান্সজেন্ডার আমেরিকানরা দেশটির সামরিক বাহিনীতে কাজ করার ক্ষেত্রে নানা নীতিগত পরিবর্তনের মুখোমুখি হয়েছেন।
ডেমোক্র্যাট প্রশাসনগুলোকে ট্রান্সজেন্ডার আমেরিকানদের খোলাখুলিভাবে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করে সামরিক বাহিনীতে কাজ করতে দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। অন্যদিকে ট্রাম্প সব সময় ট্রান্সজেন্ডারদের দূরে রাখতে চেয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ২০১৬ সালে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীতে ট্রান্সজেন্ডার সেনাদের কাজ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বারাক ওবামা।
এই নীতির অধীনে মার্কিন সেনাবাহিনীতে কর্মরত ট্রান্সজেন্ডার সেনারা খোলাখুলি নিজেদের লৈঙ্গিক পরিচয় দেওয়ার অনুমতি পান। ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ট্রান্সজেন্ডার আমেরিকানরা নিজস্ব লৈঙ্গিক পরিচয়ে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পান।
কিন্তু ২০১৮ সালে নিজের প্রথম মেয়াদকালে ট্রাম্প তাঁর পূর্বসূরি ওবামা প্রশাসনের নেওয়া এই নীতি স্থগিত করেন। পরে তিনি তা পুরোপুরি পাল্টে দেন। এ নিয়ে অধিকার গোষ্ঠীগুলো সমালোচনায় মুখর হয়।
ট্রাম্প দাবি করেন, ট্রান্সজেন্ডার সেনারা বিঘ্ন সৃষ্টিকারী, ব্যয়বহুল। তাঁরা সেনাদের সামরিক প্রস্তুতি ও সৌহার্দ্য নষ্ট করেন।
২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসেন জো বাইডেন। ক্ষমতায় গ্রহণের পরপরই তিনি এ বিষয়ে ট্রাম্পের দেওয়া বিধিনিষেধের পাল্টে দেন। তখন বাইডেন বলেছিলেন, সেনাবাহিনীতে কাজ করার যোগ্য সব আমেরিকানের এই সুযোগ পাওয়া উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে প্রায় ২০ লাখ সেনা রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সব মিলিয়ে অনুমিত ট্রান্সজেন্ডার সেনা ১৫ হাজার।