মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য তিনি দলমত–নির্বিশেষে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে কাজ করবেন। আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি আদালতটিতে জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার কংগ্রেসের এক শুনানিতে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘অত্যন্ত একরোখা এ সিদ্ধান্তের’ বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে তিনি বদ্ধপরিকর। রিপাবলিকানরা যখন আইসিসির কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্যোগ নিচ্ছে, তখনই এমন মন্তব্য করলেন ব্লিঙ্কেন। আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাবটির বিষয়ে শিগগিরই ভোটাভুটি হতে পারে।
গত সোমবার আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের তিন নেতার বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন তিনি। তাঁরা হলেন গাজায় হামাসের নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার, হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডসের কমান্ডার মোহাম্মদ দেইফ এবং সংগঠনটির রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়া।
যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সদস্য নয়। তবে এর আগে ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসহ আদালতটির বিভিন্ন বিচার কার্যক্রমকে সমর্থন জানিয়েছিল ওয়াশিংটন।
গতকাল মঙ্গলবার কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের ফরেন রিলেশনস কমিটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে রিপাবলিকান সিনেটর জেমস রিশক জানতে চান, যেসব দেশের বিচারব্যবস্থা স্বাধীন, বৈধ ও গণতান্ত্রিক, তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলানো থেকে আইসিসিকে বিরত রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আইন প্রণয়নে ব্লিঙ্কেন সমর্থন দেবেন কি না।
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই দলের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে একটি উপযুক্ত পদক্ষেপ নির্ধারণের জন্য আমরা আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। এমনটা করতে আমি বদ্ধপরিকর।’
ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, ‘নিঃসন্দেহে একরোখা এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নির্ধারণের জন্য আমাদের উদ্যোগী হতে হবে।’
ইতিমধ্যে আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য মার্কিন কংগ্রেসে দুটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে।
তবে চলতি মাসের শুরুর দিকে রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য চিপ রয় যে বিলটি উত্থাপন করেছেন, সেটির প্রতি কংগ্রেস সদস্যদের আগ্রহ বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিলটির নাম ইলেজিটিমেট কোর্ট কাউন্টার অ্যাকশন অ্যাক্ট। এতে বলা হয়েছে, আইসিসি যদি যুক্তরাষ্ট্রের সুরক্ষিত ব্যক্তি এবং তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো বাতিল না করে, তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ, তাঁদের বর্তমান মার্কিন ভিসা প্রত্যাহার এবং দেশটিতে লেনদেন নিষিদ্ধ করতে হবে।
রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি পরিষদের অন্তত ৩৭ জন আইনপ্রণেতা বিলটিকে কো-স্পনসর করছেন। এর মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদের তৃতীয় সর্বোচ্চ রিপাবলিকান নেতা এলিসে স্টেফানিকও আছেন।