রাশিয়ায় ইরানি ড্রোন: জাতিসংঘ প্রস্তাবের লঙ্ঘন বলছে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স, একমত যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনে হামলায় ব্যবহৃত ড্রোনের একটি ইঞ্জিন
ছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের করা এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়াকে ইরানের ড্রোন সরবরাহ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন। সোমবার যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারাও তেমনটাই মনে করে। ২২৩১ নামে জাতিসংঘের ওই প্রস্তাবে ইরান ও ছয় শক্তিধর দেশের মধ্যে ২০১৫ সালে হওয়া পারমাণবিক চুক্তিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। খবর রয়টার্সের

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইরান নির্মিত শাহেদ-১৩৬ কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করে রাশিয়া ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে হামলা করেছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। ইরান রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহের কথা অস্বীকার করেছে। রাশিয়া এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি।

সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ সকালে আমাদের ফরাসি ও ব্রিটিশ মিত্ররা তাদের মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলেছে যে রাশিয়ার জন্য ইরান যে চালকবিহীন বিমান (ড্রোন) সরবরাহ করছে, তা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ প্রস্তাবের লঙ্ঘন। এর সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করছি।’

বেদান্ত প্যাটেল আরও বলেন, ‘আমাদের ধারণা, এসব চালকবিহীন বিমান (ড্রোন) ইরান থেকে রাশিয়ায় স্থানান্তর করা হয়েছে। রাশিয়া এগুলো ইউক্রেনে ব্যবহার করছে। ২২৩১ প্রস্তাবের আওতায় যেসব অস্ত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তার একটি এটি।’

মার্কিন এক কর্মকর্তার কথা অনুযায়ী, পররাষ্ট্র দপ্তরের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সোমবার সকালে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে হামলায় ইরানি ড্রোন ব্যবহার করেছে রাশিয়া। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন-জ্যাঁ-পিয়েরেও অভিযোগ করেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার ইরানি ড্রোন ব্যবহার করা নিয়ে তেহরান মিথ্যা বলছে।

তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তৎপরতা সীমিত করতে ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ প্রস্তাবের আওতায় চুক্তিটিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।

প্রস্তাবের আওতায় ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়াতে চেয়েছিলেন। তবে নিরাপত্তা পরিষদ তাঁর সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এর মধ্য দিয়ে ইরানের জন্য আবারও অস্ত্র রপ্তানি শুরু করার সুযোগ তৈরি হয়।

তবে পশ্চিমা কূটনীতিকেরা বলছেন, প্রস্তাব অনুযায়ী এখনো ক্ষেপণাস্ত্র ও এ–সংক্রান্ত প্রযুক্তি নিয়ে ইরানের ওপর বিধিনিষেধ জারি আছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কার্যকর থাকা এ বিধিনিষেধ অনুযায়ী ইরান ড্রোনের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সামরিক ব্যবস্থা ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে না।