তুলসী গ্যাবার্ড
তুলসী গ্যাবার্ড

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হতে চলা কে এই তুলসী গ্যাবার্ড

একসময় ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সদস্য। রাজনীতি করেছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে। পরে রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দেন। তাঁর নাম তুলসী গ্যাবার্ড। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তুলসীকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দিতে যাচ্ছেন।

জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের দায়িত্ব পেলে তুলসী গ্যাবার্ড সবার জন্য ‘গর্ব’ করার মতো মানুষ হয়ে উঠবেন বলে গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। এখন তুলসীর সামনে শুধু সিনেটে অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষা। মার্কিন সিনেটের সমর্থন পেয়ে উতরে গেলে তিনি নিশ্চিতভাবে গোয়েন্দা পরিচালকের দায়িত্ব বুঝে পাবেন।

আগে থেকে তুলসীর কিন্তু গোয়েন্দাগিরির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিজ্ঞতা নেই। তবে দুই দশকের বেশি সময় ধরে মার্কিন বাহিনীতে একজন সেনাসদস্য হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। কুয়েত ও ইরাক যুদ্ধের সময় দেশ দুটিতে তাঁকে মোতায়েন করা হয়েছিল। এ ছাড়া দুই বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন তুলসী।

২০১৩ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ডেমোক্রেটিক পার্টির একজন কংগ্রেস সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তুলসী। ২০২০ সালের নিজ দল থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত সরে দাঁড়ান। আর ২০২২ সালে দল ছাড়েন তিনি। তখন অভিযোগ করে তুলসী বলেছিলেন, ডেমোক্রেটিক পার্টি ‘যুদ্ধবাজদের’ আধিপত্যে চলছে।

তুলসী গ্যাবার্ড বিয়ে করেছেন আব্রাহাম উইলিয়ামস নামের একজন সিনেমাটোগ্রাফারকে। তুলসীর বাবার নাম মাইক গ্যাবার্ড। মেয়ের মতো বাবারও দলবদলের ইতিহাস রয়েছে। প্রথমে তিনি রিপাবলিকান পার্টি থেকে সিনেট সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে ডেমোক্রেটিক পার্টিতে যোগ দেন।

ডেমোক্রেটিক পার্টি ছাড়ার পর ২০২২ সালেই রিপাবলিকান শিবিরে যোগ দেন তুলসী। এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। গত সেপ্টেম্বরে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিতর্কের প্রস্তুতি নিতেও ট্রাম্পকে সহায়তা করেছিলেন তিনি।

হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নামের কারণে তুলসী গ্যাবার্ডকে অনেকেই ভারতীয় বলে মনে করেন। তবে ভারতের সঙ্গে তাঁর কিন্তু কোনো সম্পর্ক নেই। তুলসীর মা হিন্দু মতাদর্শে দীক্ষা নেন এবং তাঁর সব সন্তানের হিন্দু নাম দেন। তুলসীও নিজেকে হিন্দু হিসেবে পরিচয় দেন। মার্কিন কংগ্রেসে তিনিই প্রথম হিন্দু সদস্য। আইনপ্রণেতা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় ভগবত গীতা হাতে শপথ নিয়েছিলেন তিনি।

যাহোক, রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দেওয়ার পর অল্প সময়ে তুলসী গ্যাবার্ড যে ট্রাম্পের আস্থাভাজন হয়েছেন, তাঁকে গোয়েন্দা পরিচালক পদে বেছে নেওয়া থেকেই বোঝা যায়। গত সোমবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলছিলেন, ট্রাম্প প্রশাসনে কাজ করাটা তাঁর জন্য সম্মানজনক হবে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পরমাণু যুদ্ধ ঠেকাতে তিনি যদি কোনো সহযোগিতা করতে পারেন, তাহলে অবশ্যই করবেন।