ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের আরভিন শহরে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভবন দখলে নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। গতকাল বুধবার তাঁরা ভবনটি ঘেরাও করেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে পুলিশের কয়েকটি সংস্থাকে ডেকেছেন। ক্লাস বাতিল করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকা সবাইকে যাঁর যাঁর জায়গায় নিরাপদে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মুখপাত্র এসব তথ্য জানিয়েছেন। আরভিন পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে আরভিন পুলিশসহ অরেঞ্জ কাউন্টির কয়েকটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা পদক্ষেপ নিয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি এবং কেউ আহত হয়নি।
সম্প্রতি নিউইয়র্ক সিটির কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে তা ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান নেন এবং বিক্ষোভ শুরু করেন। লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে প্রায় ৪০ মাইল দক্ষিণে আরভিনে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও একই ধরনের বিক্ষোভ হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা দাবি জানাচ্ছেন, যেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দেয়।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র টম ভাসিচ বলেন, বুধবার ২০০ বা ৩০০ জনের মতো বিক্ষোভকারী আরভিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি লেকচার হল ঘিরে ফেলেন। তখন সেখানে কোনো ক্লাস চলছিল না।
ভাসিচ আরও বলেন, বিক্ষোভকারীদের থামাতে ক্যাম্পাস পুলিশ পদক্ষেপ নেয় এবং আশপাশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সহযোগিতা চায়। আরভিন পুলিশ এবং অরেঞ্জ কাউন্টি শেরিফের ডেপুটিরা সেখানে উপস্থিত হয়েছেন।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক সংবাদপত্র অরেঞ্জ কাউন্টি রেজিস্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন সুরক্ষা উপকরণ পরা পুলিশ সদস্যরা একটি ব্যারিকেড তৈরি করেন। এক কর্মকর্তা লাউড স্পিকারে বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে করে বলেন, তাঁরা বেআইনিভাবে সমাবেশ করেছেন। তাঁরা সেখান থেকে না সরলে গ্রেপ্তার করা হবে।
ভাসিচ বলেন, ওই ভবনসংলগ্ন চারটি গবেষণা ভবনের ভেতরে কয়েক শ মানুষ আটকা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভেতরে থাকা মানুষদের সেখানেই নিরাপদে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। দিনের বাকি সময়ের ক্লাসগুলো বাতিল করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাঁবু তৈরি করে যেখানে বিক্ষোভ করছেন, এর কাছেই লেকচার হলটির অবস্থান।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের ঘটনায় ইতিমধ্যে বেশ কজন বিক্ষোভকারী আটক হয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।