অ্যাসাঞ্জের বিষয়ে কোনো সমাধান দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ
রয়টার্স। ফাইল ছবি

উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের তোলা অভিযোগ তুলে নেওয়ার বা অন্য কোনো সমাধানের ইঙ্গিত দেখছেন না তাঁর আইনজীবীরা। গত বুধবার অ্যাসাঞ্জের এক আইনজীবী এ কথা বলেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের আইনজীবীদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে সম্মত হতে যাচ্ছে। এর আওতায় দোষ স্বীকার করে নিতে হবে অ্যাসাঞ্জকে। এর পরিবর্তে তাঁর বিরুদ্ধে গোপন নথি ফাঁসের অভিযোগ তুলে নেওয়া হবে। এ বিষয়ে প্রতিবেদনে জ্ঞাত সূত্রের উল্লেখ করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন বিচার বিভাগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গোয়েন্দা আইনে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে তোলা ১৮টি অভিযোগ প্রত্যাহার করা হবে। এর জন্য অ্যাসাঞ্জকে দোষ স্বীকার করে নিতে হবে। দূর থেকে অর্থাৎ লন্ডনে বসেই তিনি এ চুক্তিতে সই করতে পারবেন। এই চুক্তিতে সই করলে দ্রুত তিনি মুক্তি পাবেন। কারণ, ইতিমধ্যে তিনি লন্ডনের কারাগারে পাঁচ বছর কাটিয়েছেন।

তবে অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী দল বলেছে, বিচার বিভাগের কৌশল পরিবর্তন সম্পর্কে তাঁরা কিছু জানেন না।

অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী ব্যারি পোলক এক ই-মেইল বিবৃতিতে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের হাইকোর্টে মামলা চলাকালে এ বিষয়ে তাঁর আইনজীবীদের মন্তব্য করা অনুচিত। তবে আমরা বলতে পারি, মার্কিন বিচার বিভাগ এ মামলার সমাধান করতে চায় এমন কোনো ইঙ্গিত আমাদের দেওয়া হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র এখনো অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ১৮টি অভিযোগে তাঁকে যুক্তরাজ্য থেকে প্রত্যর্পণ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এতে অ্যাসাঞ্জের ১৭৫ বছর কারাদণ্ড হতে পারে।’

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী দল ‘দোষ স্বীকার চুক্তি’ (গিল্টি পিলা) নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা করেছে।

ইরাক ও আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত বিপুলসংখ্যক গোপন নথি ২০১০ সালে ফাঁস করে দেয় উইকিলিকস। মার্কিন গোপন নথি ফাঁসের এই ঘটনায় ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। ২০১৯ সালে অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ। এর আগে সাত বছর ধরে তিনি লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসের আশ্রয়ে ছিলেন। এর পর থেকে অ্যাসাঞ্জের প্রত্যর্পণ চায় যুক্তরাষ্ট্র।

তাদের অভিযোগ, নথি ফাঁস করে অনেকের জীবনে বিপদ ডেকে এনেছেন তিনি। তবে অ্যাসাঞ্জ সমর্থকেরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কুকর্ম সামনে আনায় নিপীড়নের শিকার অ্যাসাঞ্জ। বেশ কয়েকটি মানবাধিকার ও গণমাধ্যম সংস্থার পাশাপাশি মেক্সিকো, ব্রাজিল ও অস্ট্রেলিয়ার নেতারা অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।