উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে নিখোঁজ সাবমেরিনের খোঁজে অভিযান চালানোর সময় ওই এলাকায় পানির তলদেশে একধরনের শব্দ শোনা গেছে। আজ বুধবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার অনুসন্ধানের তৃতীয় দিনে কানাডীয় উড়োজাহাজ এসব শব্দ শনাক্ত করে। পরে তা যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডকে জানানো হয়।
সাগরের তলদেশে রোবটের সাহায্যে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড এক টুইটার পোস্টে বলেছে, পানির তলদেশে শব্দ শনাক্ত হওয়ায় ইতিমধ্যে অনুসন্ধানকারী রোবটের অবস্থান পরিবর্তন করে শব্দের মূল উৎপত্তিস্থলের দিকে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে এখনো নিখোঁজ সাবমেরিনটিকে শনাক্ত করা যায়নি।
টাইটান সাবমেরিনটি ২১ ফুট দীর্ঘ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাবমেরিন সরবরাহকারী কোম্পানি ওশানগেট এটি পরিচালনা করে থাকে। গত রোববার আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে থাকা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে পর্যটকদের নিয়ে রওনা দিয়ে নিখোঁজ হয় ‘টাইটান’। যাত্রার ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের মাথায় ছোট সাবমেরিনটির সঙ্গে ভূপৃষ্ঠের নিয়ন্ত্রণকক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পর্যন্ত পৌঁছাতে এটির সাধারণত দুই ঘণ্টা সময় লাগে।
সাবমেরিনটিতে যে পরিমাণ অক্সিজেন মজুত থাকে, তা দিয়ে ৯৬ ঘণ্টা পানির নিচে টিকে থাকা যায়। সে অনুযায়ী, সাবমেরিনটি যদি এখন পর্যন্ত অক্ষত থাকে, তাহলে এর যাত্রীরা আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ পাবেন।
সাবমেরিনটিতে থাকা পাঁচ যাত্রীর পরিচয় প্রকাশ করেছে বিবিসি। তাঁরা হলেন হ্যামিশ হার্ডিং, শাহজাদা দাউদ, সুলেমান দাউদ, পল হেনরি নিরজিওলেট ও স্টকটন রাশ।
৫৮ বছর বয়সী হ্যামিশ হার্ডিং একজন ব্রিটিশ অভিযাত্রী। তিনি মহাকাশে গেছেন এবং বেশ কয়েকবার দক্ষিণ মেরুতেও ভ্রমণ করেছেন।
৪৮ বছর বয়সী শাহজাদা দাউদ পাকিস্তানের একটি ধনী পরিবারের সদস্য। ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের প্রতিষ্ঠিত দুটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সেবাকাজের সঙ্গে তিনি যুক্ত। তাঁর ছেলে সুলেমান দাউদও ওই সাবমেরিনে ছিলেন। ১৯ বছর বয়সী সুলেমান শিক্ষার্থী।
৭৭ বছর বয়সী পল হেনরি নারজোলেত ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক ডুবুরি। ১৯৮৭ সালে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ এলাকায় যাওয়া প্রথম অভিযাত্রী দলের সঙ্গে তিনি ছিলেন।
১৯১২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের উদ্দেশে প্রথম যাত্রা শুরু করে টাইটানিক। সেবারই এক হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় সে সময়ের সবচেয়ে বড় এই জাহাজ। এতে জাহাজটিতে থাকা ২ হাজার ২০০ যাত্রীর মধ্যে ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি মারা যান। ১৯৮৫ সালে আটলান্টিকের তলদেশে ১২ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া যায়।