যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ভারতীয় রামাস্বামী যেভাবে ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে চান

চীনের সঙ্গে করা সামরিক জোট থেকে রাশিয়াকে বের করে আনতে চান বিবেক রামাস্বামী
ছবি: এএফপি ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থিতার লড়াইয়ে নামতে যাওয়া নেতারা এরই মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতির কথা বলছেন। তবে তাঁদের চেয়ে অনেকটাই ব্যতিক্রমী প্রচার চালাচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক বিবেক রামাস্বামী। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট হলে তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে চান। তিনি চান, দরকার হলে এ অঞ্চলের কিছু অংশ মস্কোর নিয়ন্ত্রণে থাকুক। ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিক, সেটা তিনি চান না।

যুক্তরাষ্ট্রে আগামী বছরের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে এ নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির হয়ে প্রার্থিতার লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছেন রামাস্বামী। সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাশিয়া-চীন সামরিক জোটকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে বড় সামরিক হুমকি বলে উল্লেখ করেন রামাস্বামী।

রামাস্বামী বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি মস্কো সফরে যাবেন এবং রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। তিনি মনে করেন, সংঘাত থামাতে চাইলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবশ্যই চীনের সঙ্গে গড়া সামরিক জোট থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

৩৭ বছর বয়সী বিবেক রামাস্বামীর জন্ম ১৯৮৫ সালের ৯ আগস্ট

এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে রামাস্বামী লিখেছেন, ‘আমি ইউক্রেন যুদ্ধ থামাব। এর জন্য চীনের সঙ্গে করা সামরিক জোট থেকে পুতিনকে বের করে আনতে হবে। রাশিয়াকে হারানোটা লক্ষ্য হবে না, যুক্তরাষ্ট্রের বিজয় অর্জনকেই লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে।’

সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রামাস্বামী বলেন, ‘ভ্লাদিমির পুতিনের পতন ঘটাতে সি চিন পিংকে কাছে টানার একরোখা সিদ্ধান্তে অটল বাইডেন প্রশাসন। আমি মনে করি, সি চিন পিংয়ের পতনের জন্য ভ্লাদিমির পুতিনকে কাছে টানতে হবে। ঠিক যেমন ১৯৭২ সালে নিক্সন চীনে গিয়েছিলেন। আমি মনে করি, পুতিন নতুন যুগের মাও। আমি মস্কো সফর করব এবং চীনের সঙ্গে করা সামরিক জোট থেকে রাশিয়াকে বের করে আনব।’

রামাস্বামী মনে করেন, ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার কারণে রাশিয়া চীনের দিকে ঝুঁকছে।

রামাস্বামী বলেন, ‘আমাদের জন্য বর্তমানে রাশিয়া-চীন সামরিক জোটটি সবচেয়ে বড়, একক সামরিক হুমকি। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা, পারমাণবিক সক্ষমতায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের তুলনায় রাশিয়া অনেকখানি এগিয়ে। আবার চীনের নৌবাহিনীর সক্ষমতা আমাদের চেয়ে বেশি।

আধুনিক জীবনধারার জন্য আমরা যে ধরনের অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল, সে ধরনের অর্থনীতির সংমিশ্রণে দেশ দুটি একে অপরের সঙ্গে সামরিক জোট গড়েছে। অন্য কোনো রাজনৈতিক দল এ নিয়ে কথা বলছে না। সবচেয়ে বাজে বিষয় হলো, ইউক্রেনের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার কারণে রাশিয়া ক্রমাগত চীনের দিকে ঝুঁকছে।’

এই রিপাবলিকান নেতা বলেন, তিনি নির্বাচনে জয়ী হলে তাঁর পররাষ্ট্রনীতির মূল জায়গা হবে সামরিক জোটটিকে দুর্বল করে দেওয়া। তিনি মনে করেন, পুতিনকে হারানোর ওপর জোর না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জয় নিশ্চিত করাকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

৩৭ বছর বয়সী রামাস্বামীর জন্ম ১৯৮৫ সালের ৯ আগস্ট। ওহাইও অঙ্গরাজ্যের সিনসিনাটি শহরে তিনি বেড়ে উঠেছেন। তাঁর মা-বাবা ভারতের কেরালা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী হন।

রামাস্বামীসহ এখন পর্যন্ত তিন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রার্থিতা পাওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন। অপর দুজন হলেন নিকি হ্যালি ও হর্ষ বর্ধন সিং।