নির্বাচনী র‍্যালিতে যোগ দিতে শুক্রবার উইসকনসিনের ম্যাডিসনে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ৫ জুলাই, ২০২৪।
নির্বাচনী র‍্যালিতে যোগ দিতে শুক্রবার উইসকনসিনের ম্যাডিসনে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ৫ জুলাই, ২০২৪।

কেবল ‘ঈশ্বর’ আমাকে সরে যেতে রাজি করাতে পারেন: বাইডেন

প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম নির্বাচনী বিতর্কে ‘নিষ্প্রভ’ জো বাইডেনের বয়স এবং শারীরিকভাবে তাঁর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালনের সক্ষমতা নিয়ে খোদ ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে বেশ উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দলটির একটি অংশ এখন প্রকাশ্যেই বাইডেনকে আগামী নভেম্বরের নির্বাচনী দৌড় থেকে সরে যেতে বলছে।

৮১ বছর বয়সী বাইডেন নিজেও তাঁর বয়সের বিষয়টি স্বীকার করেন। কিন্তু তিনি দল, অর্থদাতা, সমর্থক ও ভোটারদের বোঝাতে চাইছেন,আরও চার বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালনের পথে বয়স কোনো বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না। নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে তাই সরে দাঁড়ানোর কোনো ইচ্ছা তাঁর নেই।

 ‘তখন থেকে অনেকেই বলে যাচ্ছেন, জো কী করতে চলেছেন? আমার উত্তর হলো, আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি এবং পুনরায় জিততে চলেছি।’
—মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

এ বিষয়ে উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, ‘একমাত্র “সর্বশক্তিমান ঈশ্বর” আমাকে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি করাতে পারেন।’

গতকাল শুক্রবার ওই সাক্ষাৎকারে বাইডেন মনঃসংযোগ কতটা ধরে রাখতে পারেন, সে বিষয়ে একটি পরীক্ষা (কগনিটিভ টেস্ট) দিতেও অস্বীকৃতি জানান। আরও এক মেয়াদে দায়িত্বপালনে বাইডেন কতটা সক্ষম, তা প্রমাণে তাঁর মনঃসংযোগ ধরে রাখার পরীক্ষা দেওয়া এবং ভোটারদের আশ্বস্ত করতে সেই ফল প্রকাশের দাবি উঠেছে।

বাইডেন এ বিষয়ে বলেন, ‘আমাকে প্রতিদিনই মনঃসংযোগ ধরে রাখার পরীক্ষা দিতে হয়। প্রতিদিনই আমার ওই পরীক্ষা হয়...আমি যা যা করি, তার সবই পরীক্ষা।’

বাইডেনের এই সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জর্জ স্টেফানোপোলোস। পুরো সাক্ষাৎকারজুড়ে স্টেফানোপোলোস প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে তাঁর স্বাস্থ্য ও সক্ষমতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন করে গেছেন।

বাইডেন বলেন, ‘আমার মনে হয় না, এবারের নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট হতে আমার চেয়ে যোগ্য আর কেউ আছে।’

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রথম নির্বাচনী বিতর্কে ভালো না করার কারণ হিসেবে তিনি ক্লান্তি ও ঠান্ডা লাগাকে দায়ী করেছেন।

২২ মিনিটের ওই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের সময়ের চেয়ে অনেক বেশি স্পষ্ট করে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বাইডেন। তবে এদিনও তাঁর গলার স্বর দুর্বল ছিল এবং মাঝেমধ্যে তা কর্কশ শুনিয়েছে।

গতকাল উইসকনসিনের ম্যাডিসনে একটি নির্বাচনী সমাবেশেও অংশ নেন বাইডেন। সেখানে তাঁকে বেশ উজ্জীবিত দেখাচ্ছিল। সেখানেও ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে ভালো করতে না পারার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, তখন থেকে অনেকেই বলছেন, জো কী করতে চলেছেন?

‘এই হলো আমার উত্তর। আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি এবং পুনরায় জিততে চলেছি।’

ম্যাডিসনে গতকালের সমাবেশে কয়েকজন ভোটারের হাতে ‘মশাল অন্য হাতে দিন’ ’, ‘নিজের উত্তরসূরি রাখুন, সরে দাঁড়ান’ লেখা ব্যানার–ফেস্টুন দেখা গেছে।

সমাবেশে বাইডেন বলেন, ‘আমি খুব বুড়ো হয়ে গেছি বলে যা যা বলা হচ্ছে, আমি তার সবই দেখছি। আমি কি দেড় কোটি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করার জন্য খুব বেশি বুড়ো ছিলাম? আমি কি ৫০ লাখ আমেরিকানের জন্য শিক্ষার্থী ঋণ মওকুফ করার জন্য খুব বেশি বুড়ো ছিলাম?‘আপনারা কি মনে করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারানোর জন্য আমি খুব বেশি বুড়ো?’ ভিড় থেকে উত্তরে সবাই ‘না’, ‘না’ বলে চিৎকার করে ওঠেন।