চলতি বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ের কথা দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করেছেন জো বাইডেন। স্থানীয় সময় সোমবার নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেট সদস্যদের কাছে লেখা এক চিঠিতে বাইডেন এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
নিজের মানসিক সুস্থতা ও নির্বাচনী প্রচারের কার্যকারিতা নিয়ে বিরাজমান শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বাইডেন চিঠিতে লেখেন, ‘গণমাধ্যম ও বিভিন্ন মহলের জল্পনা সত্ত্বেও আমি আপনাদের জানাতে চাই, নির্বাচন করতে, নির্বাচনের দৌড় শেষ করতে এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করতে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’
ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষ থেকে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন করে বাইডেনের জয়ী হওয়া নিয়ে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, চিঠিতে তিনি তা জোরালো ভাষায় নাকচের চেষ্টা করেছেন। দুই পৃষ্ঠার এই চিঠিতে বাইডেন লেখন, ‘কীভাবে সামনে এগোতে হবে তা নিয়ে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অনেক আলোচনা হয়েছে। এখন এসব আলোচনা বন্ধ করার সময় হয়েছে। এখন আমাদের সামনে একটাই কাজ। আর তা হলো ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করা। ডেমোক্রেটিক পার্টির কনভেনশনের আগে আমাদের হাতে ৪২ দিন সময় আছে, সাধারণ নির্বাচনের আগে সময় আছে ১১৯ দিন। এই অবস্থায় সংকল্পের দুর্বলতা বা করণীয় নিয়ে অস্পষ্টতা ট্রাম্পকে সাহায্য করবে, আর ক্ষতি করবে আমাদের।’
চলতি সপ্তাহটি বাইডেনের রাজনৈতিক জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গত মাসের শেষের দিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম মুখোমুখি বিতর্কের পর দেশটির প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের প্রথম অধিবেশন শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার। এমন একটি পরিস্থিতিতে রোববার দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্রেটিক পার্টির কিছু সদস্য বিরোধী দলীয় নেতা হাকিম জেফরিসকে বলেছেন, বাইডেনের সরে দাঁড়ানো উচিত।
বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা সিএনএনকে জানান, প্রেসিডেন্ট ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবেন। (তিনি তাঁদের নিজের প্রার্থিতার বিষয়ে বোঝাতে চেষ্টা করবেন।)
এদিকে মঙ্গলবার বাইডেনের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ এদিন হাকিম জেফরিসের সঙ্গে ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্যদের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক রয়েছে। বৈঠকে বাইডেনের বিষয়ে দলের সদস্যদের ধৈর্যের ‘বাঁধ ভাঙবে’ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ২৭ জুন ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্ক বিপর্যয়ের পর থেকে নির্বাচনী দৌড় থেকে বাইডেনের দাঁড়ানোর দাবি বাড়ছে। বিভিন্ন জরিপ ও প্রতিবেদন বলছে, দলের সদস্য, অর্থদাতা ও সাধারণ ভোটারদের বড় একটা অংশ বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর পক্ষে। কিন্তু বিতর্কে তেমন একটা ভালো করতে না পারার কথা স্বীকার করলেও নির্বাচন করার বিষয়ে নিজের দৃঢ় সিদ্ধান্তের কথা ইতিমধ্যে একাধিকবার জানিয়েছেন বাইডেন।
বিতর্কের পর বাইডেন ব্যক্তিগতভাবে এরই মধ্যে নিজ দলের প্রতিনিধি পরিষদের অন্তত ২০ জন আইনপ্রণেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এ ছাড়া পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের (ডেমোক্র্যাট) নেতা চাক শুমার, নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যালঘু দলের (ডেমোক্র্যাট) নেতা হাকিম জেফরিস, প্রতিনিধি ন্যান্সি পেলোসি ও জেমস ক্লাইবার্নের সঙ্গেও কথা বলেছেন।
বাইডেনের সঙ্গে কথা বলার পর শুমার ও ক্লাইবার্ন বাইডেনর পক্ষ কথা বললেও জেফরিসকে চুপ থাকতে দেখা গেছে। পেলোসি বিতর্কে বাইডেনের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাকে ‘ন্যায়সংগত’ বলে মন্তব্য করেছেন।