যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় ব্যবহার করা মুঠোফোনসহ অন্যান্য ডিভাইস থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক সরানোর নির্দেশ দিয়েছে হোয়াইট হাউস। গত বছরের শেষ নাগাদ চীনা এ অ্যাপটি নিষিদ্ধে একটি নির্দেশ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউস এমন সিদ্ধান্ত নিল।
৩০ দিন সময় দিয়ে সরকারি সংস্থাগুলোকে একটি চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেটের পরিচালক শালান্ডা ইয়ং। সেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের উপাত্তগুলো সুরক্ষিত রাখতে সব সরকারি সংস্থাগুলোকে তাদের মুঠোফোন ও ডিভাইস থেকে অবশ্যই টিকটক সরিয়ে ফেলতে হবে। তবে নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, সরকারি সংস্থার বাইরে সাধারণ ব্যবহারকারীরা আগের মতোই টিকটক ব্যবহার করতে পারবেন।
এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা ও তাইওয়ানসহ যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেকের বেশি অঙ্গরাজ্যে টিকটকের ওপর একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। যদিও হোয়াইট হাউসের নতুন নির্দেশনায় খুব কম সংখ্যক টিকটক ব্যবহারকারীর বাধার মুখে পড়বেন, তবে এর মধ্য দিয়ে বড় পরিসরে অ্যাপটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হলো।
যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চীনের ‘নজরদারি বেলুন’ ওড়ার ঘটনায় বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে সরকারি ডিভাইসে টিকটক নিষিদ্ধের ঘোষণা দিল দেশটির প্রশাসন। যদিও ব্যবহারকারীদের তথ্য টিকটক চীন সরকারের হাতে তুলে দেয় বলে আগে থেকে অভিযোগ ছিল মার্কিন কর্মকর্তাদের। তাঁদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এভাবে বেইজিংয়ের হাতে চলে যেতে পারে।
তবে টিকটকের মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স বলে আসছে, তাদের তৈরি অ্যাপটি গুপ্তচরবৃত্তির জন্য ব্যবহার করা হয় না। এই অ্যাপটি নিয়ে নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ভুল বোঝাবুঝি থেকে সৃষ্টি হয়েছে। আর হোয়াইট হাউসের নতুন নির্দেশনার পর আজ মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দমিয়ে রাখতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। তাঁরা কঠোরভাবে এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করছেন।
গত বছরে ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে এক ভোটাভুটির মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহার করা ডিভাইসগুলোতে টিকটক বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে সিদ্ধান্তের বিষয়টি ৬০ দিনের মধ্যে সব সরকারি সংস্থাকে জানানের নির্দেশনা দেওয়া হয় মার্কিন সরকারকে। তবে কংগ্রেসের ওই সিদ্ধান্তের আগেই হোয়াইট হাউস, প্রতিরক্ষা দপ্তর ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারি ডিভাইসে টিকটক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল।