ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর চিরশত্রু যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছিল তেহরান। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর গতকাল সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে তারা বিস্তারিত কিছু বলেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার সাংবাদিকদের বলেন, এ ব্যাপারে তিনি বিস্তারিত বলছেন না। তবে ইরান সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মূলত ব্যবস্থাপনাগত কারণে তাঁরা সেটা দিতে পারেননি।
ম্যাথু মিলার ইঙ্গিত দেন, গত রোববার দুপুরে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর সেটিকে খুঁজে পেতে দ্রুত সাহায্য চাইছিল ইরান।
ইতিমধ্যে তেহরান নিশ্চিত করেছে, প্রেসিডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৯ আরোহী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র শোক জানিয়েছে, তবে বলেছে যে রাইসির হাতে ‘রক্ত’ লেগে আছে।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে তেহরানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তা সত্ত্বেও দুই দেশের মধ্যে কীভাবে যোগাযোগ হলো, তা বলতে অস্বীকৃতি জানান মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র।
ম্যাথু মিলার শুধু বলেন, রোববার কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইরান। যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে বলে, এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিদেশি সরকারের অনুরোধে তারা সাড়া দেয়। এ ক্ষেত্রেও তারা ইরানকে সাহায্য করত। তবে মূলত ব্যবস্থাপনাগত কারণে সেটা সম্ভব হয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি গত রোববার দুপুরের দিকে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের পর্বতঘেরা ভারজাগান এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। হেলিকপ্টারটিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদোল্লাহিয়ানসহ ৯ আরোহী ছিলেন।
১৬ ঘণ্টার বেশি সময় উদ্ধার তৎপরতার পর গতকাল সোমবার সকালে হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পাওয়া যায়। এরপর রাইসিসহ হেলিকপ্টারটির সব আরোহীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে ইরান সরকার।
এদিকে এএফপি বলছে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত কমাতে তেহরান ও ওয়াশিংটন ওমানে বৈঠক করার পর এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের শোকবার্তায় বলা হয়েছে, ইরান এখন নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিচ্ছে। এ অবস্থায় ইরানের জনগণ ও তাদের মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র আবার তার সমর্থন জানাচ্ছে।
মার্কিন প্রশাসন বলেছে, এটি একটি রেওয়াজমাফিক শোকবার্তা। এটি রাইসির প্রতি কোনো রকম সমর্থন প্রকাশ করছে না। রাইসি সেই ব্যক্তি, যিনি বিচারক থাকাকালে গণহারে রাজবন্দীদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালে কর্তৃপক্ষ নারীদের গণ–আন্দোলন কঠোরভাবে দমন করেছে।