ফ্লয়েড হত্যা

পিঠে হাঁটু চেপে ধরা পুলিশের সাড়ে ৩ বছরের সাজা

জর্জ ফ্লয়েডকে এভাবে হত্যার পর পুলিশের জবাবদিহি ও বর্ণবাদী নিপীড়নের ন্যায়বিচারের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়
ফাইল ছবি: এএফপি

জর্জ ফ্লয়েডের  হত্যায় ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তার সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। ২০২০ সালে মিনিয়াপোলিস শহরের পুলিশের হাতে নিরস্ত্র এই কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকের মৃত্যুতে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। খবর: আল-জাজিরার

গতকাল শুক্রবার হেনেপিন কাউন্টি ডিসট্রিক্ট কোর্টে দণ্ড ঘোষণার শুনানিতে ওহাইও অঙ্গরাজ্যের একটি কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন পুলিশ কর্মকর্তা জে আলেক্সান্ডার কুয়েং। ফ্লয়েডের নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ইতিমধ্যে দেওয়া তিন বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন তিনি।

কুয়েংয়ের বিরুদ্ধে সেকেন্ড-ডিগ্রি নরহত্যায় সহায়তা ও প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। তিনি অক্টোবরে দোষ স্বীকার করেন। তাঁর দুটি দণ্ডের সাজাভোগ একসঙ্গে চলবে।

মিনেসোটা অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের প্রতিনিধিত্ব করা সরকারি কৌঁসুলি ম্যাথিউ ফ্রাঙ্ক বলেন, ‘ওই দিন কুয়েং নিছক কোনো দর্শক ছিলেন না। ফ্লয়েডকে সাহায্য করার জন্য কিছু দর্শক যা করার চেষ্টা করেছিলেন, তিনি তার চেয়েও কম করেছিলেন।’

জাল নোট ব্যবহারের অভিযোগ এনে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টনের বাসিন্দা জর্জ ফ্লয়েডকে ২০২০ সালের ২৫ মে আটক করে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরের পুলিশ। আটকের পর ফ্লয়েডের ঘাড় হাঁটু দিয়ে সড়কে চেপে ধরেন আরেক পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চৌভিন। এ সময় ফ্লয়েড বারবার বলতে থাকেন, তিনি নিশ্বাস নিতে পারছেন না।

ওই দিন ঘটনাস্থলে থাকা তিন পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যে একজন ছিলেন কুয়েং। চৌভিন যখন ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু চেপে ধরেন, তখন কুয়েং তাঁর পিঠে হাঁটু চেপে ধরেছিলেন।

এক পথচারী ফ্লয়েডকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধ করেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে ফ্লয়েডকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ফ্লয়েড মিনিয়াপোলিস শহরের একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।

ফ্লয়েডকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত বছর শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা চৌভিনকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। থমাস লেন নামের অপর পুলিশ কর্মকর্তাও এ ঘটনায় দোষ স্বীকার করেছেন।

এই হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের জবাবদিহি ও বর্ণবাদী নিপীড়নের ন্যায়বিচারের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। একপর্যায়ে এই আন্দোলন ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।