যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস

দোদুল্যমান ৭ রাজ্যের কৃষ্ণাঙ্গ ভোট এখনো কমলার পক্ষে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই প্রধান দুই প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে নির্বাচনে ফল নির্ধারণী সাত দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যের কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন কমলা হ্যারিস। সর্বশেষ এক জরিপে দেখা গেছে, কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে কমলার জনপ্রিয়তা গত সেপ্টেম্বরের চেয়ে অক্টোবরে আরও বেড়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাত অঙ্গরাজ্যকে বলা হয় দোদুল্যমান। কারণ, এসব রাজ্যের ভোটার কাকে ভোট দেবেন, সেটা নির্বাচনের আগপর্যন্ত বোঝা যায় না। রাজ্যগুলো হলো জর্জিয়া, অ্যারিজোনা, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিন। সম্প্রতি এসব রাজ্যের কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের নিয়ে জরিপ করেছে হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনিশিয়েটিভ অন পাবলিক অপিনিয়ন’।

আগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন এমন প্রশ্নের ভিত্তিতেই ২ থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই জরিপ চালানো হয়েছে। জরিপে অংশ নিয়েছেন এসব অঙ্গরাজ্যের ৯৮১ জন কৃষ্ণাঙ্গ ভোটার। তাতে দেখা গেছে, জরিপে অংশগ্রহণকারী ৮৪ শতাংশ ভোটার কমলাকে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। আর ৮ শতাংশ বলেছেন ট্রাম্পের কথা। বাকি ৮ শতাংশ এখনো সিদ্ধান্তই নেননি।

এবারের নির্বাচনে তাঁদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কী, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছিল জরিপে অংশগ্রহণকারীদের কাছে। দেখা গেছে, কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিষয় হচ্ছে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও নির্বাচন। এর পরই রয়েছে অর্থনীতি ও গর্ভপাতের অধিকার। জরিপে অংশগ্রহণকারী কৃষ্ণাঙ্গদের ৬৩ শতাংশ বলেছেন, নভেম্বরের নির্বাচনে ভোট দিতে মুখিয়ে আছেন তাঁরা।

হ্যারিসের বিষয়ে তাঁদের অবস্থান কী জানতে চাইলে ৬১ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ ভোটার বলেছেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলার মতের সঙ্গে তাঁদের মতের খুবই মিল রয়েছে। তবে ১৪ শতাংশ বলেছেন, তাঁদের মতের সঙ্গে কমলার মতের অনেক অমিল। অন্যদিকে ট্রাম্পের মতের সঙ্গে মিল থাকার কথা বলেছেন মাত্র ১০ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ ভোটার। ট্রাম্পের মতের সঙ্গে কোনো মিল নেই মনে করেন ৭৪ শতাংশ।

কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে গত সেপ্টেম্বরের চেয়ে অক্টোবরে কমলার জনপ্রিয়তা বাড়ার আভাসও পাওয়া গেছে জরিপে। গত মাসে হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির করা জরিপে দেখা গিয়েছিল, দোদুল্যমান এসব রাজ্যের কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের ৮২ শতাংশের সমর্থন পাবেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা। এদিকে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা আরও কমে যাচ্ছে।

গত মাসের জরিপে দেখা গিয়েছিল, দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের ১২ শতাংশ ট্রাম্পকে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন। সর্বশেষ জরিপে সেই হার আরও কমে ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে এসব রাজ্যে বয়স ৫০ বছরের কম এমন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের মধ্যে ট্রাম্পের সমর্থন বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এ বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের পাঁচজনে একজন ট্রাম্পকে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন।

এই সপ্তাহে কমলা হ্যারিস ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের জন্য অর্থনৈতিক সুবিধা আরও বাড়াবেন। তাঁর এ ঘোষণার পর হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির জরিপের ফলাফল প্রকাশ্যে এল। কমলা হ্যারিসের পরিকল্পনা অনুযায়ী, কৃষ্ণাঙ্গ উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসায়িক ঋণের অংশবিশেষ বা পুরোটাই মওকুফ করা হবে। পাশাপাশি শিক্ষানবিশ ও মেন্টরশিপ কর্মসূচি চালু করা হবে।