রাশিয়ার মতো ‘একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের বিরুদ্ধে লড়াই করে জেতার চেষ্টার’ বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। গত শনিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পারমাণবিক অস্ত্রনীতিতে পরিবর্তন আনার তিন দিন পর দেওয়া এই ভাষণে পশ্চিমাদের কঠোর সমালোচনা করেন লাভরভ। পশ্চিমা কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে ঠাসা সাধারণ পরিষদের এই অধিবেশনে বক্তৃতায় লাভরভ অভিযোগ করেন, মস্কোকে কৌশলগতভাবে ‘পরাজিত করার’ চেষ্টা হিসেবে পশ্চিমারা ইউক্রেনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। একই উদ্দেশ্যে আত্মঘাতী জায়গায় ঠেলে দিতে ইউরোপকে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পারমাণবিক হুমকি ও সংঘাতের ভয় ছড়াচ্ছে রাশিয়া। ইউক্রেনে হামলা শুরু হওয়ার অল্প সময় আগে বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে পুতিন বলেছিলেন, তাঁর দেশ বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশগুলোর একটি। যুদ্ধ শুরু হওয়ার অল্প সময় পরেই নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রবিষয়ক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। এর পর থেকে নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে তাঁর বক্তৃতা কখনো কঠোর হয়েছে, কখনো নরম হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে গত বুধবার নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রনীতিতে পরিবর্তন আনার ঘোষণা দেন পুতিন। এ দিন তিনি বলেন, রাশিয়ায় যদি এমন কোনো দেশ হামলা চালায় যাদের পারমাণবিক শক্তিধর কোনো দেশের সহায়তা রয়েছে, মস্কো সেটাকে যৌথ হামলা বলে ধরে নেবে।
এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি পুতিন। কিন্তু তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, প্রচলিত কোনো হামলা ‘আমাদের সার্বভৌমত্বের জন্য গুরুতর হুমকি’ হিসেবে দেখা দিলে জবাবে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন পুতিনের ঘোষণাকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে মন্তব্য করেছে। তবে শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে লাভরভের বক্তৃতার তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। তাঁর বক্তৃতার সময় সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের এক জুনিয়র কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।