‘মা, আমি সব সময় তোমার কথা ভাবি। তোমাকে নিয়ে ভাবনা, তোমার দেওয়া উপদেশগুলো আমার কাছে উজ্জ্বল তারার মতো। সেগুলো মেনে চলি।’ মায়ের কাছে এভাবেই মনের কথাগুলো লিখেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের এক সেনাসদস্য। তা-ও ১০০ বছরের বেশি সময় আগে। এখন মা বেঁচে নেই। নেই তাঁর সন্তানও। তবে এত দিন পর সেই চিঠি পৌঁছেছে পরিবারের কাছে।
ওই সেনাসদস্যের নাম কার্ল হোয়ে। চিঠিটি তিনি লিখেছিলেন ১৯১৯ সালের ১০ মে, মা দিবসের আগের দিন। তখন তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহুদূরে, ফ্রান্সে। পরে তিনি দেশে ফিরেছিলেন, বিয়ে করেছিলেন। ১৯২৮ সালে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে কার্ল হোয়ের মৃত্যু হয়। সেই সময় তাঁর বয়স হয় ৩৬ বছর।
কার্ল হোয়ের লেখা সেই চিঠি সম্প্রতি অনলাইন কেনাকাটার ওয়েবসাইট ই-বেতে চোখে পড়ে একদল গবেষকের। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, সেটি হোয়ের পরিবারের কাছে পৌঁছে দেবেন। যথারীতি কাজ শুরু। ই-বে থেকে গবেষকেরা চিঠিটি ১৫০ ডলার দিয়ে কিনে নেন। বিভিন্ন সূত্র ধরে খোঁজা শুরু করেন কার্ল হোয়ের পরিবারকে। একপর্যায়ে সফলও হন। হোয়ের মেয়ের সন্ধান পান। বাবার মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ছয় বছর। অবশেষে চিঠিটি গত এপ্রিলের শেষের দিকে হাতে পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন অঙ্গরাজ্যের বেভারটন শহরের বাসিন্দা জ্যান বেলিস-স্কুইরেস।
যে জ্যান বেলিস-স্কুইরেসের কথা বলা হচ্ছে, তিনি কার্ল হোয়ের নাতনি। এত দিন পরে দাদার লেখা চিঠি হাতে পেয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত তিনি। জানালেন, চিঠিটি তাঁর কাছে একটি সম্পদের মতো। দাদাকে নিজের চোখে না দেখার জন্য দুঃখ প্রকাশ করতেও ভুললেন না।
চিঠি পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে পেরে খুশি ওই গবেষণা দলের প্রধান রই ম্যানডেলও। তিনি বলেন, ‘আমরা চিঠিটি পড়েছিলাম। সেটি খুবই চমৎকার। আমাদের মনে হয়েছিল, সেটি অবশ্যই বাসায়, সঠিক মালিকের কাছে পৌঁছে দেওয়া উচিত।’