যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি অরলিংটনের জাতীয় সমাধিক্ষেত্রে নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েন। এ ঘটনায় তাঁর কড়া সমালোচনা করেছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। তিনি বলেন, ‘সেনাসদস্যদের সমাধিক্ষেত্র রাজনীতি করার জায়গা নয়।’
কমলা হ্যারিস গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্ট করেন। সেখানে লিখেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) রাজনীতির স্বার্থে পবিত্র ভূমির অসম্মান করেছেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী বলেছে, সমাধিক্ষেত্রের ভেতরে ছবি তোলা বা ভিডিও করার ব্যাপারে বিধিনিষেধ আছে। প্রচারাভিযানের সময় সে বিষয়েই ট্রাম্প শিবিরকে সতর্ক করছিলেন সেখানকার এক কর্মচারী। এ সময় ট্রাম্পের দলের এক কর্মী ওই কর্মচারীকে আচমকা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। তবে সমাধিক্ষেত্রের বিতর্কিত এ ঘটনা অস্বীকার করে ট্রাম্প শিবির বলেছে, নিহত সেনাদের পরিবারের কাছ থেকে তাঁরা সমাধিক্ষেত্রের ভিডিও করার অনুমতি পেয়েছেন।
গত সোমবার অরলিংটনের জাতীয় সমাধিক্ষেত্রে বিতর্কের মুখে পড়ে ট্রাম্পের নির্বাচনী শিবির। নিহত ১৩ সেনাসদস্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। তিন বছর আগে আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার চলাকালে ওই সৈন্যরা নিহত হন।
এদিকে বিতর্ক সৃষ্টির পর গতকাল প্রথমবারের মতো এ বিষয়ে মুখ খুললেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। এক্সে তিনি লিখেছেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে হ্যারিস বেশ কয়েকবার ভার্জিনিয়ায় অরলিংটন সমাধিক্ষেত্রে গিয়েছেন। রাজনৈতিক সাফল্যের জন্য তিনি কখনোই এটিকে ব্যবহার করবেন না।
কমলা হ্যারিস বলেন, ‘অবসরে যাওয়া সেনাসদস্য, সামরিক বাহিনীর পরিবার এবং সর্বোপরি সেনাবাহিনীকে সম্মান দেওয়া উচিত। কখনোই অশ্রদ্ধা করা উচিত নয়। তাদের সঙ্গে আচরণে সর্বোচ্চ সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশে একটুও যাতে ঘাটতি না থাকে। আর এ বিষয়ে সব আমেরিকানই একমত হবেন। আর আমার বিশ্বাস, যে ব্যক্তি এই সাধারণ ও পবিত্র দায়িত্বটি পালন করতে পারবেন না, তাঁর কখনোই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়া উচিত নয়।’
এদিকে সমাধিক্ষেত্রের ঘটনায় যাঁরা সমালোচনা করেছেন, তাঁদের জবাব দিয়েছেন ট্রাম্প। গত বৃহস্পতিবার মিশিগানে অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনী শোভাযাত্রায় তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন। ট্রাম্প জানান, সমাধিক্ষেত্রে তাঁকে ছবি তোলার জন্য অনুরোধ করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আমি সেখানে গেলাম, তাঁরা আমাকে ছবি তোলার অনুরোধ করলেন। অথচ তাঁরা (সমালোচকেরা) বলছেন, আমি নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছি।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘যে জিনিসটি আমি অনেক বেশি পাই, তা হলো প্রচার। আমার এটির দরকার নেই। আমার এই প্রচারের প্রয়োজন নেই।’
আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এতে ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কমলা হ্যারিস। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়বেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁরা ১০ সেপ্টেম্বর এবিসিতে বিতর্কে অংশ নেবেন। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে এটিই হবে প্রথম মুখোমুখি বিতর্ক। সাম্প্রতিক কয়েকটি জরিপে আসন্ন নির্বাচনে দুজনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে।