যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে একটি বাড়িতে আগুন লেগেছিল। সেই আগুনে ৩ শিশুসহ ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আগুন লাগার পরে অগ্নিনর্বাপণ বাহিনীর সদস্যরা আসেন। আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে এসে এক অগ্নিনির্বাপণকর্মী দেখেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা সবাই তাঁরই পরিবারের সদস্য।
পেনসিলভানিয়ার পুলিশ নিহত ছয়জনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তবে পাঁচ, ছয় ও সাত বছর বয়সী যে তিন শিশু মারা গেছে, তাদের পরিচয় এখনো জানায়নি। গতকাল শুক্রবার ভোরে ওই বাড়ির বারান্দা থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগুনের ঘটনাকে অপরাধ বিবেচনা করে ইতিমধ্যে একটি তদন্ত শুরু হয়েছে।
নেসকোপেক ভলান্টিয়ার ফায়ার কোম্পানির ওই অগ্নিনির্বাপণকর্মীর নাম হ্যারল্ড বেকার। তিনি বলেন, আগুনের ঘটনায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে তাঁর ছেলে, মেয়ে, শ্বশুর, শ্যালক, শ্যালিকা, তিন নাতি–নাতনি ও আরও দুজন স্বজন ছিলেন। যে তিন শিশু মারা গেছে, তাদের মধ্যে দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে। এসব শিশু ওই বাড়ির বাসিন্দা ছিল না। গ্রীষ্মের ছুটিতে সেখানে বেড়াতে গিয়েছিল তারা।
রাজ্য পুলিশ এখন পর্যন্ত যাঁদের শনাক্ত করেছে, তাঁরা হলেন ডেল বেকার (১৯), স্টার বেকার (২২), ডেভিড ডবার্ট সিনিয়র (৭৯), শ্যানন ডরবার্ট (৪২), লরা ডবার্ট (৪৭), মারিয়ান স্লাসার (৫৪)।
হ্যারল্ড বেকার বলেন, বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাঁর ছেলে ডেল বেকারও অগ্নিনির্বাপণ বাহিনীতে যোগ দিয়েছিল। পুলিশ বলছে, রক্ত দেখে মরদেহ শনাক্ত করতে পারে, তাঁদের সঙ্গে থাকা এমন কিছু কুকরের সাহায্যে ধসে যাওয়া ওই ভবনটি থেকে হ্যারল্ড বেকারের পরিবারের সদস্যদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগুন লাগার পর তিন ব্যক্তি কোনোমতে বাড়িটি থেকে বের হতে সমর্থ হন ও প্রাণে বাঁচেন।
ফিলাডেলফিয়া থেকে উত্তর–পশ্চিমে ১৫০ কিলোমিটার দূরের নেসকোপেকে একটি গ্রামীণ এলাকা। সেখানে স্থানীয় সময় গতকাল দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে আগুন লাগে।
পেনসিলভানিয়া রাজ্য পুলিশের লেফটেন্যান্ট ডেরেক ফেলসম্যান গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাড়ির পেছনের অংশ দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করার সাহসী চেষ্টা চালিয়েছিলেন অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা। কিন্তু আগুনের তেজ ও তাপ অনেক বেশি হাওয়ার কারণে তাঁরা সেখান থেকে পিছু হটতে বাধ্য হন।’
হ্যারল্ড বেকার উইকস ব্যারে শহরের সংবাদপত্র সিটিজেন ভয়েসকে বলেন, ‘যখন আমরা এখানে ডিউই স্ট্রিটে মোড় ঘুরলাম, তখনই আমি রাস্তার নিচের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারি এটা কাদের বাড়ি। আমি ছিলাম প্রথম গাড়িতে। যখন আমি গাড়ি থেকে নামলাম তখন পুরো এলাকায় আগুন জ্বলছিল। আমরা এর মধ্যেই ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করি।’
ডব্লিউএনইপি–টিভিকে হ্যারল্ড বেকার বলেন, ‘শিশুরা সেখানে ছিল এবং আমার দুই সন্তান তাদের খালা–খালুর বাড়িতে ঘুরতে সম্প্রতি সেখানে গিয়েছিল। এর মধ্যে এক শিশু ওই বাড়ির। সবাই মিলে সেখানে ঘুরতে গিয়েছিলেন তাঁরা।’
পেনসিলভানিয়ার গভর্নর টম ওলফ টুইটারে লিখেছেন, হৃদয়বিদারক এ ঘটনায় তিনি ভীষণ মর্মাহত।