যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় আক্রান্ত হয়েছিলেন খ্যাতিমান লেখক সালমান রুশদি। ছুরিকাঘাতে এক চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন তিনি। মর্মান্তিক ওই ঘটনার ৯ মাস পর আবার প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে এসে কথা বললেন বুকারজয়ী এই লেখক। তিনি বললেন, সন্ত্রাসবাদে ভয় পাওয়া যাবে না। সহিংসতা যেন লক্ষ্যভ্রষ্ট না করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্টোরিতে এই অনুষ্ঠান হয়। সেখানে অতিথি ছিলেন ৭০০ ব্যক্তি। রুশদি অনুষ্ঠানের মঞ্চে ওঠার সময় দাঁড়িয়ে তাঁর প্রতি সম্মান জানান সবাই। সেখানে বক্তৃতা করতে গিয়ে রুশদি বলেন, ‘একেবারে ফিরে না আসার চেয়ে বরং এভাবে ফিরে আসা ভালো।’
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক সালমান রুশদি ২০ বছর ধরে নিউইয়র্কে বসবাস করছেন। গত বছরের আগস্টে এই নিউইয়র্কেরই একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে বক্তৃতার সময় তাঁর ওপর হামলা হয়।
লেখক–সাহিত্যিকদের অধিকার ও বাক্স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সংগঠন পেন আমেরিকা গতকাল নিউইয়র্কে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সালমান রুশদিও একসময় এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে ‘মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরা’ সালমান রুশদিকে সম্মানজনক পুরস্কার দেওয়া হয়।
আগাম কোনো ঘোষণা ছাড়াই ডান চোখে কালো লেন্সের চশমা পরে মঞ্চে আসেন ৭৫ বছর বয়সী সালমান রুশদি। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ যেন আমাদের আতঙ্কিত করে না ফেলে। সহিংসতা আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। লড়াই অব্যাহত আছে।’
সালমান রুশদি ১৯৮১ সালে তাঁর লেখা বই ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। কিন্তু ১৯৮৮ সালে তাঁর চতুর্থ বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর জন্য তাঁকে ৯ বছর লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল।
‘স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসে ধর্ম অবমাননা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এটি প্রকাশের পর থেকে রুশদি হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন। বইটি প্রকাশের এক বছর পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খামেনি রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেন। সেই সঙ্গে তাঁর মাথার দাম হিসেবে ৩ মিলিয়ন (৩০ লাখ) ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন।