টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে পাঁচ আরোহী নিয়ে আটলান্টিকের তলদেশে গিয়ে নিখোঁজ সাবমেরিন টাইটানের দুর্ভাগ্য যখন অনেকটা নিশ্চিত, তখন ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়েছেন লাস ভেগাসের এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। তিনি সেখানে জানিয়েছে, তাঁকে কিছুটা কম দামে এই যাত্রার দুটি আসনের টিকিট কিনতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
তিন দিন আগে জে ব্লুম তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ভাবতেই পারছি না...আমিও এই অভিযাত্রার প্রস্তাব পেয়েছিলাম। আমি যদি রাজি হতাম, তাহলে আমি আজ সেই পাঁচজনের একজন হতাম।’
জে ব্লুম নিজের ফেসবুক পোস্টে তাঁর ও ওশানগেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টকটন রাশের মধ্যকার বার্তা আদান–প্রদানের স্ক্রিনশট দেন। টাইটানে থাকা পাঁচ আরোহীর একজন স্টকটন।
ব্লুম ও স্টকটনের এই কথোপকথন নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন করে মেইল অনলাইন। সেখানে বলা হয়, ব্লুম নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু স্টকটন তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলেন, বেসামরিক সাবমেরিনের ৩৫ বছরের ইতিহাসে কেউ আহত হয়েছেন, এমন উদাহরণও নেই।
ব্লুম বলেন, গত মার্চে স্টকটনের সঙ্গে তাঁর সরাসরি দেখা হয়েছিল। তখন তাঁরা এ ধরনের অভিযাত্রা নিয়ে কথা বলেন। ব্লুম তাঁর পোস্টে লিখেছেন, স্টকটন এতটাই নিশ্চিন্ত ছিলেন যে তাঁর কাছে রাস্তা পার হওয়ার মতোই ছিল বিষয়টি।
‘গত ফেব্রুয়ারিতে স্টকটন আমাকে ও আমার ছেলেকে তাঁর সঙ্গে মে মাসে টাইটানিকের ধ্বংসস্তূপ দেখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। পরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে মে মাসের সেই যাত্রা স্থগিত হয়েছিল। সেই ভ্রমণ পরে ১৮ জুন শুরু হয়।
‘আমি নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ করেছিলাম। এর জবাবে স্টকটন আমাকে বলেছিল, “এটি হেলিকপ্টারে ওড়া, এমনকি স্কুবা ডাইভিং করার চেয়েও অনেক নিরাপদ। বেসামরিক সাবমেরিনের ৩৫ বছরের ইতিহাসে কেউ আহত হয়েছেন, এমন উদাহরণও নেই।”
‘আমার তখন মনে হয়েছিল, সে যা বলছে তা জেনেবুঝেই বলছে। কিন্তু তার বিশ্বাস ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সে যা করছিল, তা সে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করত।
‘গত ১ মার্চ শেষবার স্টকটনের সঙ্গে আমরা শেষ দেখা হয়। মিসরের লুক্সর শহরে সে আমাকে টাইটানিক জাহাজের ছবির প্রদর্শনী দেখাতে নিয়ে যায়। এরপর লুক্সর ফুডকোর্টে এই অভিযাত্রা ও নিরাপত্তা বিষয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়। রাস্তা পার হওয়ার চেয়ে এটি বেশি নিরাপদ, সে এতটাই নিশ্চিত ছিল। সে আমাকে একটি ছবির বই উপহার দিয়েছিল। সেখানে তার ও পল অঁরি নাজোলের স্বাক্ষর ছিল।
‘আমি তাকে জানিয়েছিলাম, সময়ের কারণে এবার হচ্ছে না। আগামী বছর হয়তো চেষ্টা করব। আমাদের যে দুটি আসনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছিল, সে দুটিতে গিয়েছে শাহজাদা দাউদ ও তার ১৯ বছরের ছেলে সুলেমান দাউদ।
‘শেষবারের মতো স্টকটন ও ক্র-এর আত্মার শান্তি কামনা করছি।’