উত্তর আমেরিকা মহাদেশের বেশ কিছু জায়গায় গতকাল সোমবার ভরদুপুরে যেন সন্ধ্যা নেমে এসেছিল। পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের কারণে দিনের বেলাতেই অন্ধকার নেমে এসেছিল। আর তা নেচেগেয়ে উপভোগ করেছেন দর্শনার্থীরা। অনেকে আবার দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বিয়েও করেছেন।
উত্তর আমেরিকা মহাদেশে সাত বছরের মধ্যে এটিই প্রথম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ, যেটি দিনের বেলায়ও আঁধার নামিয়ে এনেছিল। গতকাল মেক্সিকোর যে জায়গায় পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ শুরু হয় তার খুব কাছে একটি বিচ রিসোর্ট আছে। সেখানে জড়ো হওয়ার পাশাপাশি অনেক দর্শনার্থী ওহাইও নদী এবং যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্তের নায়াগ্রা জলপ্রপাত এলাকায় জড়ো হয়েছিলেন। পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখে দর্শনার্থীরা বিস্মিত হন এবং আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ করতে থাকেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস অঙ্গরাজ্যের রাসেলভিলে শহরে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। অঙ্গরাজ্যের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে শহরটির অবস্থান। সেখানে গতকাল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় গণবিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে প্রায় ৪০০ জুটি বিয়ে করেছেন।
মেঘলা আকাশ সত্ত্বেও গতকাল নায়াগ্রা ফলস স্টেট পার্কে প্রায় দুই হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। সেখানেও দুটি বিয়ে হয়েছে এবং একটি বিয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে।
মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে সেখানে জড়ো হওয়া মানুষেরা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ শেষ হওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে কিছুক্ষণের জন্য মেঘ সরে গিয়েছিল। এতে ৩০ সেকেন্ডের মতো সূর্যগ্রহণ দেখতে পেয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন দর্শনার্থীরা। তাঁরা উল্লাস করতে থাকেন। চিৎকার করে বলে ওঠেন, ‘এটা খুব সুন্দর।’
পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময়কার আঁধার কেটে আকাশ যখন উজ্জ্বল হয়ে উঠল, অর্থাৎ সূর্যের ওপর থেকে চাঁদের ছায়া সরে যেতে লাগল, তখন একটি ব্যান্ড দল ১৯৯২ সালে রক ব্যান্ড আরইএমের গাওয়া ‘ম্যান অন দ্য মুন’ গাইতে থাকে।
কানাডার অন্টারিওতে নায়াগ্রা জলপ্রপাত–সংলগ্ন নদীর তীরজুড়ে ৩০৯ ব্যক্তি সূর্যের আদলে পোশাক পরে এসেছিলেন। তাঁদের কেউ কেউ সিঙ্গাপুর ও লন্ডনের মতো দূরের জায়গা থেকেও গিয়েছিলেন। বিশ্বে একই ধরনের সৌর পোশাক পরে এক জায়গায় এত বেশি মানুষের অংশগ্রহণের ঘটনা এটাই প্রথম।
প্রতিযোগিতার আয়োজকেরা বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে নতুন বিশ্ব রেকর্ড হয়েছে। এর আগের রেকর্ডটি হয়েছে ২০২০ সালে। তখন চীনে ২৮৭ জন অংশগ্রহণকারী সূর্যের মতো দেখতে পোশাক পরেছিলেন।